মাঠের কৃষক এবং শহরের ক্রেতাদের মধ্যে সেতুবন্ধন সময়ের দাবি

  08-12-2018 02:38PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : শীতের সবজিতে বাজার সয়লাব। দামও তুলনামূলক কিছুটা কম। নতুন গোল আলুও বাজারে আছে অনেক আগে থেকেই। আগে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও বর্তমানে মানভেধে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গোল আলু। সবজির দাম কিছুটা কমায় ক্রেতা সাধারণ খুব খুশি।

রাজধানীর কয়েকটি বাজারে হরেক রকম শীতকালীন সবজি চোখে পড়ছে। ক্রেতার অভাবেেএবং বাসি হওয়ায় অনেক সবজি অবিক্রীত পড়তে থাকতে দেখা যায় কারওয়ান বাজরে। এর মধ্যে ডাঁটাহীন সাদা মূলা, লাউ ও সিসিংগা। অবিশ্বাস্য হলেও এগুলো স্তূপাকারে পড়ে থাকতে দেখা গেছে বাজারের মাঝখানের একটি গলিতে। আর লাউ পড়ে ছিল ডাস্টবিনের আশপাশে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিবছরের মতো এবারও ধারাবাহিকভাবে দাম কমে এখন বেশ সস্তায় বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন রকম সবজি। নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি। প্রকারভেদে প্রতি কেজি শিম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বিচি ছাড়া ১৫ থেকে ২০ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, প্রতিটি ফুলকপি আকারভেদে ১৫ থেকে ২৫ টাকা, বাঁধাকপি ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কচি লাউয়ের দাম একটু চড়া। লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। দেশী টমোটো বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি।পালং শাক, লাল শাক, মূলা শাক, সরষে শাকের আঁটি ১০ টাকায় বিক্রি হলেও দামাদামি করলে তিন আঁটি ২০ টাকায় মিলে। দাম একটু বেশি লাউ শাকের। দাম খুবই চড়া। এক আঁটি ৩০ টাকা!

বাজারে নতুন এসেছে টক পালং। এক আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। আঁটিগুলো এতই ছোট যে চার আঁটিতেও মধ্যম পরিবারের এক তরকারি হবে না। এর বাইরে করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটল ২৫ থেকে ৩০ টাকা, মুলা ২০ থেকে ২৫ টাকা হালি, কাঁচা মরিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে শাকসবজি কম দামে কিনতে পেরে ক্রেতা সাধারণ খুশি। বাজারে গেলে দোকানে সারি সারি শাকসবজির পসরা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। দাম আগে তুলনায় কিছুটা কম হওয়ায় ক্রেতারা বেশি করে কিনছেন। কমদামে এসব সদায় কিনে খুশি মনে ফিরছেন বাড়ির দিকে। এমনটা যদি সব সময় থাকত আর হতো, তাহলে তাদের মুখে হাসি লেগে থাকত বৈকি।

বাজারে এসব পণ্য প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসে। পরিবহন ব্যয় কম হলে এগুলো আরো কম দামে পাওয়া যেত বলে মনে করে অভিজ্ঞ মহল। রাজধানী ঢাকায় আনার সময় পথে পথে চাঁদাবাজি না হলে এসব পণ্য আরো কমে কিনতে পারতেন ক্রেতারা। এভাবে নৈরাজ্য দূর হলে ঢাকায় বসবাসকারী মানুষ সহনীয় পর্যায়ে এসব কিনতে সক্ষম হতেন।

হাতবদল হয়ে পণ্যের বাজার মূল্য যত বাড়ে প্রান্তিক চাষিরা কিন্তু সেটার সুবিধা পান না। এসব সুবিধা পায় মধ্যসত্তভোগীরা।যারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে। যদিও অনেক সময় দেখা যায় চাষি তার খরচই তুলতে পারেন না। অথচ মাঝখানে মুনাফা লোটে একশ্রেণীর মানুষ। গ্রামের উৎপাদনকারী থেকে শহরের ভোক্তা পর্যন্ত একটা সেতুবন্ধন থাকলে মাঝখানের মধ্যসত্তভোগীরা বেপরোয়া হতে পারত না।

শীতকালীন শাকসবজিই শুধু নয়, সব সময় বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে শহরের বাজার থেকে মাঠের কৃষক পর্যন্ত পণ্যের মূল্যের ভারসাম্য রক্ষায় সেতুবন্ধন তৈরি করা দরকার। এতে কৃষক যেমন বাঁচবেন তেমনি ক্রেতারাও ঠকবেন না। আর মাঝখানে ব্যবসার নামে ঠকবাজি ও অনৈতিক মুনাফাবাজির কবল থেকে রক্ষা পাবেন উৎপাদনকারী কৃষক ও ক্রেতারা।

লেখক : বিশেষ প্রতিনিধি- পিএনএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন