কৃষক হতে চায় আশ্রাব

  16-03-2019 05:40PM

পিএনএস, বরিশাল প্রতিনিধি : ‘‘মারা যাওয়ার পূর্ব দিন পর্যন্ত আমাদের বাবা নিজেকে কৃষক বলে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করতেন। বাস্তবতার কারনে আজ থেকে ১৪ বছর আগে ঢাকায় অবস্তিত ফুজিকালার ল্যাবে চাকরী করলেও মাটি ও মানুষের টানে ফিরে আশি আপন ঠিকানায়। শুরু করি ব্যবসা। কিন্তু মনের অভ্যন্তরে চেপে রাখা ইচ্ছেটা পূরন করতে ৮ বছর পূর্বে নিজ গৃহে শুরু করি হাঁস-মুরগি,কবুতর,র্টাকি মুরগি পালনসহ কৃষি কাজ। ভালোই আছি।”

একান্ত সাক্ষাতকারে কথা গুলো বলছিলেন বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের কাগাশুরা বাজারের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী এবং বর্তমানে কৃষক পরিচয় দিয়ে সাচ্ছন্ধ্যবোধকারী মৃত আছমত আলী খানের পুত্র আশ্রাব আলী খাঁন। বয়স মাত্র ৪৪। তিনটি কন্যা সন্তানেরর জনক আশ্রাব আলী ব্যাবসার পাশাপাশি সময় দিয়ে থাকেন নিজের খামারে। কি নেই তার খামারে। নিজ বাসবভনের ছাঁদে কবুতরের আবাসস্থলে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৬ শত কবুতর। ভবনের এক পাশ্বে টার্কি মুরগীর আস্তানা,অন্য পাশ্বে রয়েছে দেশি মুরগীর জন্য তৈরি করা অত্যাধুনিক বসতঘর। পিছনের পুকুরে সাতার কাটছে প্রায় ২ শতাধিক হাঁস। আর পানির নিজ থেকে উকি দেওয়া মাছের ঝাঁক জানান দিচ্ছে তারা খেয়ে পড়ে ভালোই আছে। এইতো গেলো তিন দিকের কথা। অন্য পাশটায় চোঁখ ফেরালেই আপনার প্রান জুড়িয়ে যাবে সবুজ ও লালের সমাহোরে। প্রায় এক একর জমির উপর কোন ধরনের কেমিক্যাল সার বিহীন সম্পূর্ন জৈবসারে চাষ করা সবজির বাগান যেন বাংলার কথাই বলে। এখানে আশ্রাব আলীর শ্রমের প্রমান হিসেবে প্রদর্শিত হচ্ছে লাল শাক,আলু শাক,পাট শাক,লাউ শাক, কুমার শাক, মুলা শাক,পুই শাক,পালং শাক, লাউ,টমেটো,ঢেড়শ,বেগুন,ঝিঙ্গা,করোল্লা,কাকরোল,পোটল,মিষ্টি কুমার,ধুন্দল,বড়বটি,মিষ্টি আলু,লাল আলু ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির দেশি শাক সবজি। প্রতিদিন খুব ভোরে উঠে খামার পরিচালনাকারী তিন জন শ্রমিকের সাথে মিলে শুরু করেন নিজ কর্ম। সম্ভব হলে প্রতিটি কবুতর থেকে মাছের খবর নেন। ওদের খাদ্য দেওয়া থেকে শুরু করে মাঠে সবজির পরির্চযাকারীদের তদারকি করেন। এরপর নাস্তা খেয়ে বাড়ির পাশ্বেই কাগাশুরা বাজারে তার রয়েছে সব চেয়ে বড় মুদি মনোহারীর দোকান। তবে ব্যাবসায় মন নেই আশ্রাফের। নিজেকে কৃষি কাজের ভিতর ডুবিয়ে রাখতেই পছন্দ করেন। ইতি মধ্যে তার ক্ষেতের পাশ্বে প্রতিদিনই আগমন ঘটছে স্থানীয় সবজি পাইকারদের। তবে কোন ধরনের ব্যাবসায়ীক মনভাব নেই তার। কলেজের গন্ডি পেরোতে না পারলেও কোন ধরনের প্রশিক্ষন ছাড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের খামারটিকে সদর উপজেলার মধ্যে সব চেয়ে বড় খামার হিসেবে তৈরি করতে। যাতে করে যত সম্ভব মানুষকে ভেজাল ও কেমিক্যাল মুক্ত খাদ্যপন্য সরবরাহ করতে পারেন।

এ প্রসঙ্গে আশ্রাব আরো বলেন,আমার কোন উচ্চাশা নেই। তিনটি মেয়েকে মানুষ করার পাশাপাশি একজন সৎ কৃষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়াই আমার লক্ষ্য। তিনি আরো বলেন, আমার স্ত্রী শিল্পি আক্তার আমার সব কাজের প্রেরনা হিসেবে পাশে আছে। আমি আর কিছু চাই না। এদিকে আশ্রাব আলীর খাঁমার সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান,এই খামার সম্পর্কে আমাদের কোন ধারনা ছিলোনা। আমি সরজমিনে গিয়ে বিষয়টি দেখবো এবং সরকারী সুযোগ সুবিধা ও প্রয়োজন সম্পর্কে আশ্রাব আলীকে অবগত করবো।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল




@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন