বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে সাতক্ষীরার সরিষা ফুলের মধু

  18-01-2019 09:58PM

পিএনএস : দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা সাতক্ষীরার সরিষা ফুলের মধু এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। আর তাই মধু আহরণেব্যস্ত সময় পার করছেন মৌয়ালরা। চলতি বছর জেলা থেকে প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় দশ কোটি টাকা। আর এসব উৎপাদিত মধু জাপান, ভারত, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনসহ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে ধারণা মধু উৎপাদনকারী কর্মকর্তাদের।

তাদের দাবি, সরিষা ক্ষেত থেকে মধু আহরণের ফলে একদিকে মৌয়ালরা যেমন আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। অপরদিকে সরিষার ফুল থেকে মধু আহরণের সময় মৌমাছির পরাগায়নে কারণে জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ ফলন পান প্রান্তিক চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, জেলায় চলতি মৌসুমে ৯ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এছাড়া জেলার মাটি ও আবহাওয়া সরিষা চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। আর এসব সরিষা খেতের পাশে বাক্স পদ্ধতিতে সরিষা ফুলের মধু আহরণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

সাতক্ষীরার মধু খামার মালিক মোশাররফ হোসেন জানান, সাতক্ষীরার শতাধিক মধু উৎপাদনকারী খামারি এ বছর জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরিষা ফুলের মধু আহরণের কাজ করছেন। প্রতিবছর ১৫ নভেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সরিষা ফুলের মধু আহরণ করেন খামামিরা।

মোশাররফ হোসেন জানান বলেন, ‘জেলায় চলতি বছর সরিষা মৌসুমে সরিষা ফুল থেকে ৫০০ মেট্রিক টন মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। আর উৎপাদিত এসব মধু জাপান, ভারত, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মধু খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা দেওয়া হলে গার্মেন্টস কিংবা চিংড়ি শিল্পের মত মধু রপ্তানি করেও অধিক পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।’

কলারোয়া উপজেলার মধু খামারি নুর আমীন বলেন, ‘জেলায় প্রায় দেড় হাজার মধু খামারি রয়েছে। যারা সারা বছরই দেশের বিভিন্ন স্থানে মধু আহরণ করে থাকে। প্রতিবছর নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে সরিষা ফুলের মধু আহরণ শুরু করে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে।’

নুর আমীন বলেন, ‘এছাড়া সরিষা ফুলের মধু আহরণ শেষ হলেই শুরু হয় দুই মাসব্যাপী জিরা ও ধনিয়া ফুল থেকে মধু আহরণের মৌসুম। এরপর এপ্রিল মাস থেকে শুরু হয় সুন্দরবন থেকে মধু আহরণ মৌসুম অর্থাৎ সারা বছর ধরেই মধু আহরণ কার্যক্রম চলে।’

তিনি দাবি করে বলেন, ‘সরকার মধুচাষিদের সহজ শর্তে ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা করলে দেশের রপ্তানিখাতে মধু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। আবার একইসাথে সাধারণ মানুষের আত্মকর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।’

কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোহাসীন আলী জানান, সরিষার ফুল থেকে যখন মৌমাছি মধু আহরণের সময় পরাগায়নের সৃষ্টি হয়। ফলে সরিষার ফলন ২৫ থেকে ৩০ ভাগ বেশি বৃদ্ধি পায়। সরিষা চাষিদের মধ্যে আগে এসব বিষয় নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা থাকলেও বর্তমানে সেই ধারণা পাল্টে গেছে। কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা প্রান্তিক কৃষকদের এসব বিষয়ে সার্বিক পরামর্শ প্রদান দিচ্ছেন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল




@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন