রামপালে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুর বসতবাড়ি দখলের অভিযোগ

  10-01-2018 04:59PM

পিএনএস, স্টাফ রিপোর্টার (বাগেরহাট) : বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রাজনগর ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের নির্দেশে এক সংখ্যালঘুর বাস্তবাড়ি দখল করে গাছপালা ও মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজনগর ইউনিয়নের কালেখারবেড় গ্রামের মৃত অধীর কুমার সানার পুত্র প্রভাকর সানা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার বরাবর এ লিখিত অভিযোগ করেন।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, ৫নং রাজনগর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার আঃ হান্নান ডাবলু, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নার্গিস বেগম, ইউপি সদস্য জয় মন্ডলসহ বেশ কয়েক জন প্রভাবশালী ব্যাক্তি কালেখারবেড় ত্রিমোহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মানের কথা বলে ২৬ ফুট জায়গা প্রভাকর সানাকে ছেড়ে দিতে বলেন। তিনি রাজি না হওয়ায় গত ইং ৩১/১২/২০১৭ তারিখ রবিবার বিকাল ৫ টায় তার পরিষদের সদস্যসহ ১০/১৫ জন লোক বেআইনীভাবে জোরপূর্বক বাড়িতে প্রবেশ করে সীমানা নির্ধারণ করে চলে যান। পরের দিন সোমবার সকালে ইউপি সদস্য জয় মন্ডল, মহিলা সদস্য নার্গিস বেগম, সুভাষ হালদার, সমর মন্ডলসহ ১০/১৫ জন লোক নিয়ে জোরপূর্বক বাড়িতে প্রবেশ করে জমিতে থাকা ফলন্ত নারকেল গাছ, লেবু গাছ, জাম গাছ, মেহগনি ও বড় বড় শিরিশ গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে নেয়।

এ সময় প্রভাকর সানা ও তার স্ত্রী বাধা দিলে প্রভাকরের হাতে থাকা মোবাইলটি মহিলা মেম্বরের নির্দেশে জোরপূর্বক কেড়ে নেওয়া হয়। গাছপালার আনুমানিক মূল্য লক্ষাধীক টাকা বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন এবং এব্যাপারে তিনি কোথাও কোন অভিযোগ করলে তার আয়ের উৎস একমাত্র দোকানটি বন্ধ করাসহ তাকে জীবন নাশের হুমকি দেয়।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হিন্দু ওই পরিবারটির বাস্তবাড়ির একাংশ দখল করে ১৫/২০ জন লোক দিয়ে বড় বড় গাছপালা কেটে নিয়ে যেতে ও মাটি কেটে বড় বড় গর্ত করতে দেখতে পান। এ সময় সাংবাদিকদের আসার খবর পেয়ে ইউপি মেম্বর জয় মন্ডল, মহিলা মেম্বর নার্গিস বেগম এবং ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কৃষ্ণপদ মন্ডল ঘটনাস্থলে আসেন। তাদের কাছে বাস্তবাড়ি একাংশ দখল করে গাছপালা কেটে নেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কৃষ্ণপদ মন্ডল জানান, আমরা রাস্তার সামনে থেকে স্কুলের জমি পাব কিন্তু পেছন থেকে এক শতাংশ জমি নিয়েছি।

বাস্তবাড়ি দখল ও গাছপালা কেটে নেওয়ার বিষয়টি ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেন। মহিলা ইউপি মেম্বর নার্গিস বেগম জানান, আমরা প্রভাকরকে রাস্তার পাশ দিয়ে এক শতক জমি ছেড়ে দিয়ে ভেতর থেকে এক শতক জমি নিয়েছি। নির্বিচারে গাছপালা কেটে নেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান, গ্রামবাসির সাথে সমঝোতার মাধ্যমে জমি নেওয়া হয়েছে। একই কথা বলেন ইউপি মেম্বর জয় মন্ডল।

অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও রাজনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সরদার আঃ হান্নান ডাবলুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, স্কুলের জায়গা নিয়ে প্রভাকরের সাথে বিরোধ রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, অভিযোগ প্রমানিত হলে আইনত যে ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেটা আমরা মেনে নেব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কুমার পাল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ পত্র প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার উপর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগী সংখ্যালঘু ওই পরিবারটিকে প্রভাবশালী একটি মহল অভিযোগ তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি প্রদান করায় প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন