মাদারটেকে লাগেজে লাশ : ডিজে পার্টির তরুণীকে খুঁজছে পুলিশ

  13-04-2018 09:18AM


পিএনএস ডেস্ক: রাজধানীর মাদারটেক এলাকায় গত রবিবার রাতে লাগেজের ভেতরে জনশক্তি ব্যবসায়ী শাহ আলমের লাশ ফেলে পালিয়ে যাওয়া তরুণীকে প্রযুক্তির সাহায্যে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে তার নাম-ঠিকানা না জানিয়ে পুলিশ শুধু বলছে, ওই তরুণী রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলের ডিজে পার্টির নর্তকী। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের কয়েকটি দল মাঠে নেমেছে।

অন্যদিকে গত বুধবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ট্রলি ব্যাগের ভেতর থেকে এক নারীর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার হলেও গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বাকি অংশের খোঁজ পায়নি পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার রাত ৮টার দিকে এক তরুণী একটি অটোরিকশায় করে বড় একটি লাগেজ নিয়ে রাজধানীর বনশ্রীর দিক থেকে মাদারটেক প্রজেক্টের সামনে এসে নামে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর নয়াপুরে যাওয়ার কথা বলে সেখান থেকে আরেকটি অটোরিকশা ভাড়া করে। অটোরিকশাচালককে ওই তরুণী লাগেজে কাচের জিনিস থাকার কথা জানিয়ে সাবধানে ওঠানোর অনুরোধ করে। পরে দুই-তিনজন অটোরিকশাচালক মিলে সেটি ওই অটোরিকশায় উঠিয়ে দেয়। অটোরিকশাটি কিছুদূর যাওয়ার পর পানি খাওয়ার কথা বলে সটকে পড়ে ওই তরুণী। পরে আর ফিরে না আসায় সন্দেহ হয় অটোরিকশাচালক মজিবর রহমানের। তিনি আবার ফিরে যান মাদারটেকে। সেখানে লাগেজ খুলে দেখতে পান ভেতরে এক বৃদ্ধ ব্যক্তির লাশ। বিষয়টি পুলিশকে জানালে রাত ১২টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় সবুজবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। মামলার পর পরই পুলিশের দুটি দল মাঠে নামে ওই তরুণীর খোঁজে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রযুক্তি ও সোর্স ব্যবহার করে তাঁরা তরুণীর পরিচয় কিছুটা নিশ্চিত হতে পেরেছেন। এই তরুণী ডিজে পার্টির সঙ্গে জড়িত। এখন তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সবুজবাগ থানার এসআই শরিফুজ্জামান বলেন, ‘আমরা হত্যারহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছি। আশা করছি শিগগিরই এ রহস্য উদ্ঘাটিত হবে।’

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, শাহ আলম জনশক্তি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে কারো কোনো শত্রুতা ছিল কি না সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর ডিজে পার্টির ওই তরুণীর সঙ্গে তার কী সম্পর্ক সেটাও জানার চেষ্টা চলছে।

এই কর্মকর্তা আরো জানান, শাহ আলমের লাশ দাফনের জন্য তাঁর পরিবারের সবাই এখন বাগেরহাটের গ্রামের বাড়িতে রয়েছে। তারা ঢাকায় এলে শাহ আলম হত্যার বিষয়ে আরো তথ্য পেতে পারেন।

এদিকে গত বুধবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী এলাকার খালপারে পরিত্যক্ত একটি ট্রলি ব্যাগ থেকে এক নারীর লাশের খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ট্রলি ব্যাগটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে পড়ে ছিল। এক ব্যক্তি লাগেজটি পড়ে থাকতে দেখে খোলার চেষ্টা করেন। ভেতরে লাশ দেখতে পেয়ে তিনি পাশের এক দোকানিকে জানান। দোকানি থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে ব্যাগসহ খণ্ডিত লাশটি উদ্ধার করে।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমরা ব্যাগের ভেতরে লাশের কোমর থেকে নিচের অংশ পেয়েছি। মাথাসহ দেহ না পাওয়ার কারণে তার পরিচয় মেলানো সম্ভব হচ্ছে না। লাশের বাকি অর্ধেক পাওয়া গেলে হয়তো পরিচয় জানা সম্ভব হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উদ্ধারের সময় লাশে পচন ধরা ছিল না। এতে ধারণা করা হচ্ছে অন্য কোথাও ওই নারীকে হত্যা করে লাশের অর্ধেক অংশ ট্রলি ব্যাগে ভরে খুনিরা এখানে ফেলে গেছে। আমরা খুনের ঘটনাটির রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছি।’ সূত্র: কালের কণ্ঠ

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন