মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে প্রতারণা করায় আটক ৫

  20-04-2018 11:09AM


পিএনএস ডেস্ক: সাভারে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবহার করে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র এক প্রার্থীর কাছ থেকেই হাতিয়ে নিয়েছে নগদ ৮ লাখ টাকা।

একইভাবে আরো দুইজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছে প্রতারকরা। তবে পুলিশের নিয়োগে স্বচ্ছতা বজায় রাখার অঙ্গীকার আর নিবিড় তদন্তে বেরিয়ে আসে এই জালিয়াতির ঘটনা।

ঘটনা টের পেয়ে এক প্রতারক প্রার্থী গা ঢাকা দিলেও বৃহস্পতিবার ধরা পড়ে দুই প্রার্থীসহ পাঁচজন। এদের মধ্যে তিন প্রতারকের একজন ইতিমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। তাদের একজনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চাকরি দেয়ার নামে হাতিয়ে নেয়া ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ঢাকা জেলায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চূড়ান্ত নিয়োগ প্রাপ্তদের বিষয়ে যাচাই করতে গিয়েই বেরিয়ে আসে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের প্রতারণার সব তথ্য।

সূত্র মতে, ধামরাই থানার বাটুলিয়া গ্রামের তোতামিয়ার ছেলে আব্দুর রাজ্জাক মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণ হলে প্রতারকরা তাকে মাদারীপুরের শিবচর থানার ক্রোকচর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়ার সার্টিফিকেট এনে দেয়।

তবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়ার বাবার নাম মৃত জয়নুদ্দিন হলেও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়ার বাবার নাম মৃত হাসেন আলী। আর এই গড়মিল থেকেই ধরা পড়ে কোটা নিয়ে প্রতারণার বিষয়টি।

একইভাবে ধামরাইয়ের কালামপুরের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়াকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সাজিয়ে চাকরির ব্যবস্থা পাকাপাকি করা হয় তার ছেলে মনির হোসেনের।

তবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বাবার নাম সাকিন উদ্দিন হলেও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বাচ্চু মিয়ার বাড়ি কুমিল্লা জেলার বরুরা থানার ডগাবাড়িয়া গ্রামে।তার বাবার নাম মৃত সায়েদ আলী।

একই ভাবে টাকার বিনিময়ে ধামরাইয়ের ললিতনগর গ্রামের নুরুল ইসলামকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণ হয় তার ছেলে মনোয়ার হোসেন।

এই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বাবার নাম নুরুল ইসলাম হলেও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের বাবার নাম আহমেদ উল্লাহ। সে নোয়াখালি জেলার হাকিমপুরের বাসিন্দা।

ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভূইয়া জানান, বিষয়টি টের পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণ মনোয়ার হোসেন আগেই গা ঢাকা দেন। তবে প্রতারকরা প্রত্যেকেই সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ব্যবহার করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। প্রার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অংকের টাকা।

পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান জানান, কোটা নিয়ে এভাবে প্রতারণা সত্যিই ধারণার বাইরে। এ ব্যাপারে প্রতারক চক্রের সদস্য আয়নাল হোসেন,উজ্জল হোসেন ও আব্দুল আলিমকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন আদালতে এক প্রার্থীর কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা গ্রহণ ও জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেয়ার কথাও স্বীকার করেছে।

পুলিশ সুপার জানান, আমরা যে শতভাগ স্বচ্ছতার কথা বলেছিলাম তার মাঝেও কোটা ব্যবহার করে প্রতারকরা আঘাত করার চেষ্টা চালিয়েছিল। তবে আমাদের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ আর পরিশ্রম সেই সাথে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা সদস্যদের কঠোর পরিশ্রম প্রতারকদের মুখোশ খুলে দিয়েছে। খবর ইউএনবির।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন