পিএনএস : বান্দরবানের লামার সরই ইউনিয়নের কম্পনিয়া এলাকায় এস্কেভেটর মেসিন দিয়ে অবাধে পাহাড় কাটা হচ্ছে। হাজী দেলোয়ার হোসেন নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি ইতিমধ্যে ৩টি পাহাড় কেটে উজাড় করলেও স্থানীয় প্রশাসনকে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
অভিযোগ উঠেছে দেলোয়ার হোসেন কিছু অসাধু ভূমি দস্যুদের মাধ্যমে এলাকার লোকজনের জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে ভুয়া জমির ক্রয়-বিক্রয় রেজিষ্ট্রি দলিল করে অনেককে ভিটেমাটি ছাড়া করছে। সরই ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানের নামে কয়েক হাজার একর পাহাড়ি জমি রয়েছে। হাজী দেলোয়ার হোসেন চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার কেরানীরহাট সিটি সেন্টারস্থ আর.এফ বিল্ডার্স এর ব্যবস্থাপক ও মৃত এয়াজুর রহমানের ছেলে।
সরজমিনে গিয়ে ও স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, দেলোয়ার হোসেন সরই কম্পনিয়া এলাকাসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় কয়েকশত পাহাড়ি বাঙ্গালীদের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করে জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার একর জমির মালিক হয়েছেন। তার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলায়। পূর্বপুরুষ পার্বত্য এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা না হলে পাহাড়ে ভূমি ক্রয়ের আইনী সুযোগ না থাকলেও তিনি পাহাড়ে জায়গার মালিক বনে গেছেন। অন্য ব্যক্তিকে পিতা সাজিয়ে বা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
সরই ইউনিয়নের কম্পনিয়া এলাকায় গত একমাস ধরে এস্কেভেটর ও ড্রোজার দিয়ে সমানতালে পাহাড় কেটে উজাড় করলেও স্থানীয় প্রশাসন নিরব রয়েছে। কম্পনিয়া পাড়ার মো. মনিরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, দেলোয়ার হোসেন লামা উপজেলধীন ৩০৩ নং ডলুছড়ি মৌজার সরকারী পুনর্বাসিত লোকজনের জায়গার হোল্ডিং কাগজ সংগ্রহ করে কিছু অসাধু ভূমিদস্যু ও দালালের মাধ্যমে ওই জায়গা নিজের নামে করে নিয়েছে। তেমনি তার স্ত্রী, ছেলে ও নিজের নামের রেকর্ডভুক্ত জমি বিক্রয় রেজিষ্ট্রির বায়নানামা দলিল করে ভূমিহীন বানিয়ে ভিটে মাটি ছাড়া করেছে। অপরদিকে আইনকে তোয়াক্কা না করে কম্পনিয়া পাড়ায় ডোজার ও এস্কেভেটর মেশিনের সাহায্যে পাহাড় কেটে বন, পরিবেশ ধ্বংস করছে। যাতে করে পরিবেশের চরম ক্ষতি হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নাছির উদ্দিন বলেন, হাজী দেলোয়ার হোসেন কারো কথা শুনে না। কেউ তার কাজে বাধা দিলে তাকে হুমকি-ধমকি দেয়। স্থানীয় লোকজনের উপর জুলুম না করতে বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমাকে অন্য মামলায় জড়িয়ে আসামি করে কষ্ট দিচ্ছে। তার কারণে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। সে অবাধে পাহাড় কাটছে।
এদিকে এসব অভিযোগের বিষয়ে হাজী দেলোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. মকবুল হোসেন বলেন, বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করুন। ঊনারা ব্যবস্থা না নিলে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ জান্নাত রুমি বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়টি আমি জানতাম না। এখন প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া কিছুটা উন্নতি হলে সরজমিনে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা করব।
পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল
লামায় অবাধে চলছে পাহাড় কাটা
19-05-2018 03:41PM