এমপি’র পরিবারের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারের সমঝোতার প্রস্তাব

  23-06-2018 06:23AM


পিএনএস ডেস্ক: মহাখালী ফ্লাইওভারে এমপি’র স্ত্রীর গাড়ি চাপায় পথচারী সেলিম বেপারী নিহত হওয়ার ঘটনার চারদিন পার হয়েছে। ঘটনার পরপরই নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়েরও করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাফরুল থানা পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এমনকি যে গাড়িতে সেলিম বেপারীকে চাপা দেয়া হয়েছে ওই গাড়িটি জব্দ করা হয়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সিসিটিভি’র ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করা হবে। এছাড়া গাড়ির নম্বর প্লেট দিয়ে বাংলাদেশ রোডস অ্যান্ড টান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) থেকে কাগজ সংগ্রহ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক সুজন কর্মকার মানবজমিনকে বলেন, আমরা তদন্ত করছি। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার বা ওই গাড়িটি জব্দ করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে ঘটনা ধামাচাপা দিতে এমপি’র পরিবারের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারের সঙ্গে ৩০ লাখ টাকায় সমঝোতার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। নিহত সেলিম বেপারীর কর্মস্থল নাওয়ার প্রপার্টিজের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তার মাধ্যমে এ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে ওই কর্মকর্তার সঙ্গে এমপি’র পরিবারের একটি প্রাথমিক বৈঠক হয়েছে। সেলিম বেপারী পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। তার মৃত্যুতে পরিবারের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এবং ঘটনার সঙ্গে এমপি’র পরিবার জড়িত থাকার বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য এমন প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। কয়েকদিনের মধ্যে আরেকটি বৈঠকের মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

নাওয়ার প্রপার্টিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হোসেন জানান, একরামুল করিম চৌধুরী এমপি’র পক্ষ থেকেই সমঝোতার প্রস্তাব আসে। এ বিষয়ে আলোচনা করার জন্য এমপি আমার বারিধারার ডিওএইচএস’র অফিসে চারজন লোক পাঠানো হয়। তবে এই আলোচনায় এমপি, তার স্ত্রী-সন্তান এমনকি পুলিশের পক্ষ থেকে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। ইমরান জানান, সেলিম বেপারীর পরিবারের কথা চিন্তা করে ৩০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। সেখান থেকে মাসে মাসে যা আসবে তা দিয়ে যেন তারা চলতে পারে। তবে এজন্য থানায় করা মামলা তুলে নিতে হবে। এমনকি এই ঘটনায় এমপি’র পরিবারের কেউ জড়িত সেটা বলা যাবে না। ইমরান আরো জানান, এমপি বলেছেন শুধু টাকা নয় সেলিম বেপারীর পরিবারের প্রতি সুদৃষ্টি থাকবে। ভবিষ্যতে তাদের দেখভালও করবে তারা। আর সেলিম বেপারীর সঙ্গে আমার দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক। তিনি যখন মারা গেছেন। তাকে হয়তো আর পাওয়া যাবে না। তাই সবদিক বিবেচনা করেই এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছি।

গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারের প্রবেশ মুখে দাঁড়িয়ে বাসের অপেক্ষা করছিলেন সেলিম বেপারী (৫৫)। ওই সময় সংসদ সদস্য স্টিকার লাগানো বেপরোয়া গতির একটি গাড়ি এসে তাকে ধাক্কা দেয়। গাড়ির চাকায় তার মাথার খুলি ও শরীরের অন্যান্য অংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান সেলিম বেপারী। ততক্ষণে পালিয়ে যান ওই গাড়ির চালক। তবে পালিয়ে যাওয়া গাড়িটিকে ধাওয়া করেন এক মোটরসাইকেল আরোহী। শহরের কয়েকটি স্থান ঘুরে ওই গাড়িটি মানিক মিয়া এভিনিউ দিয়ে এমপি হোস্টেলে প্রবেশ করে। তখন গাড়ির চালক ওই মোটরসাইকেল আরোহীর কাছে নিজেকে এমপিপুত্র হিসেবে দাবি করেন। যদিও এই তথ্য ঘটনাস্থলে পড়ে যাওয়া ওই গাড়ির নম্বর প্লেট বিআরটিএতে বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হয়েছে আরো আগে। সূত্র: নয়া দিগন্ত

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন