চিকিৎসক ও হাসপাতালের গাফিলতিতে রাইফার মৃত্যু : তদন্ত কমিটি

  06-07-2018 03:16PM

পিএনএস ডেস্ক : চট্টগ্রামে আড়াই বছর বয়সী শিশু রাফিদা খান রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় ম্যাক্স হাসপাতাল ও চিকিৎসকের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে সিভিল সার্জনের নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটি।

শুক্রবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু রাইফা যেদিন মারা যায় ওই দিন ম্যাক্স হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা ছিল। প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশও করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে চারটি সুপারিশ করা হয়েছে। এগুলো হল:

১. চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে অভিযুক্ত তিনজন চিকিৎসকের (ডা. দেবাশীষ সেন, ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেব) বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ।
২.ম্যাক্স হাসপাতালের সার্বিক ত্রুটিপূর্ণ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা অতিদ্রুত সংশোধন।
৩. কর্তব্যরত নার্সগণ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ডিপ্লোমাধারী থাকার নিয়ম থাকলেও উক্ত হাসপাতালে তা নেই। ডিপ্লোমা নার্স দ্বারা চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে।
৪.হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সার্বক্ষণিক দ্রুত ও আন্তরিক সেবা সুনিশ্চিত করতে হবে এবং রোগীর অভিভাবককে যথাসময়ে রোগীর অবস্থা ও চিকিৎসর ব্যাপারে সর্বশেষ পরিস্থিতি অবগত করতে হবে।

তদন্ত কমিটিতে ছিলেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশু কন্যা রাফিদা খান রাইফা যখন তীব্র খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয়, তখন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের অনভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয় এবং ঐ সময় থাকা সংশ্লিষ্ট নার্সদের আন্তরিকতার অভাব না থাকলেও এ রকম জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মতো দক্ষতা বা জ্ঞান কোনোটাই ছিল না। শিশু কন্যা রাফিদা খান রাইফাকে অসুস্থতার জন্য ম্যাক্স হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা পাওয়া পর্যন্ত প্রতিটা ক্ষেত্রে তার অভিভাবকের ভোগান্তি চরমে ছিল।

এতে আরও বলা হয়, শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরী শিশুটিকে যথেষ্ট সময় ও মনোযোগ সহকারে পরীক্ষা করে দেখেননি। ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেব শিশুটির রোগ জটিলতার বিপদকালীন আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা প্রদান করেননি বলে শিশুর পিতা-মাতা অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, যা এই তিন চিকিৎসকের বেলায় সত্য বলে প্রতীয়মান হয়। হাসপাতালে রোগী ভর্তি প্রক্রিয়ায় ভোগান্তি প্রকট। চিকিৎসক নার্সদের সেবা প্রদানের সমন্বয়হীনতা ও চিকিৎসাকালীন মনিটরিংয়ের অভাব দেখা যায়। অদক্ষ নার্স ও অনভিজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের ফলে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা অনেক দুর্বল রয়েছে, বিশেষত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবায় বিশেষজ্ঞের সার্বক্ষণিক উপস্থিতির সংকটটি প্রবল।

গত শুক্রবার চট্টগ্রামের বেসরকারি ক্লিনিক ম্যাক্স হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় মারা যায় আড়াই বছরের রাইফা। তার বাবা সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুবেল খান।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন