অনিয়ম নিয়ে জানতে চাওয়ায় সাংবাদিককে আত্মহত্যার পরামর্শ! (ভিডিও)

  07-02-2019 11:59AM

পিএনএস ডেস্ক :ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের প্রত্যেক যাত্রীর টিকিটের দাম ৬৮ টাকা বাড়তি নেওয়া হচ্ছে। কেন এই টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারছেন না বাংলাদেশ রেলওয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা। কারণ জানাতে না পেরে উল্টো এক সাংবাদিককে ‘আত্মহত্যা’ করার পরামর্শ দিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জল হোসেন। বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রণালয়ে নিজের কক্ষে সাংবাদিককে এ পরামর্শ দেন সচিব।

জানা গেছে, প্রথমে গত মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে রেল সচিব মোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে যান সময় টেলিভিশনের সাংবাদিক নাজমুস সালেহী। কথা বলার সময় তিনি রেগে গিয়ে ওই সাংবাদিককে রেলসচিব বলেন, ‘এই বিষয়ে আপনার এত উৎসাহ কেন! যে লোকটা জানতে চাচ্ছে সে নিয়মিত কলকাতা যায়। সে জানতে চাইলে আমরা বলে দিবো। কারণ এই জন্য আমাদের কাছে একটা ব্যাখ্যা আছে। তবে আপনাকে আমরা কেন ব্যাখ্যা দিবো। আপনার কি কোনো প্রয়োজন আছে? আপনি তো যাত্রী না।’

পরে রেলের অপারেশন্স বিভাগের উপপরিচালক মিয়া জাহানকে ডেকে পাঠান সচিব। কিন্তু তিনিও কোনো উত্তর দিতে ব্যর্থ হন। তবে ‘পরে কথা বলার’ আশ্বাস দিয়ে চলে যান উপপরিচালক।

বুধবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে কৌশলে এড়িয়ে যান পরে রেলের অপারেশন্স বিভাগের উপপরিচালক মিয়া জাহান। পরে আবারও রেল সচিব মোফাজ্জল হোসেনের কক্ষে কথা বলতে যান ওই সাংবাদিক। কোনো ক্যামেরা না নিয়ে কক্ষে ঠোকার অনুমতি দেন তিনি।পরে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে সাংবাদিককে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনি এখন আত্মহত্যা করেন। একটা স্টেটমেন্ট লিখে যান যে, রেলের লোকেরা আমার সাথে কথা বলতে চাচ্ছে না এ মর্মে ঘোষণা দিলাম যে তারা কথা না বলার কারণে আমি আত্মহত্যা করলাম।’

জানা গেছে, ঢাকা থেকে কলকাতা যেতে ট্রেনের কেবিন আর চেয়ার এই দুই ক্যাটাগরিতে মৈত্রী এক্সপ্রেসের টিকিট বিক্রি করে কমলাপুর রেলস্টেশন। কেবিন প্রতি আসন ৩ হাজার ৪ টাকা আর চেয়ার প্রতি আসন ২ হাজার ৫শ টাকা। চেয়ার আসনের গায়ে লেখা হিসাব থেকে দেখা যায়, ভাড়া ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৮০ টাকা, ভ্যাট বাবদ ২৫২ টাকা আর ভ্রমণ কর বাবদ নেয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা করে। উল্লেখিত এই তিন খাতের যোগফল ২ হাজার ৪৩২ টাকা হলেও টিকিটেই লেখা আছে ২৫০০ টাকা। বাড়তি ৬৮ টাকা খেয়াল না করেই গুণে যাচ্ছেন যাত্রীরা।

ট্রেনের যাত্রীরা এ ব্যাপারে কথা বলতে গেলেও তাদের কোনো হিসাব বা এর কোনো উত্তরও দিচ্ছেন না টিকিট বিক্রেতারা। কমলাপুর রেলস্টেশন টিকিট বুকিং সহকারী সাইফুল ইসলাম সাংবাদিক নাজমুস সালেহীকে বলেন, ‘রেল ভবনে আলোচনা করলে ভালো হয়। বিষয়টা আসলে কী হইছে এটা ওনারা ভালো বলতে পারবে।’

তার কথার পরিপ্রেক্ষিতে রেল ভবনে কথা বলতে গেলে নিজ কক্ষে ওই সাংবাদিকের সঙ্গে এমন আচরণ করেন রেল সচিব মোফাজ্জল হোসেন।

অতিরিক্ত টাকা কোন খাতে নেয়া হচ্ছে, তা যেমন টিকিটে উল্লেখ নেই, তেমনি তা কোথায় জমা হচ্ছে সে বিষয়ে জানাতে পারেননি রেল কর্মকর্তারা। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়ে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ‘এখানে যদি অনিয়ম থাকে অবশ্যই দূর করবো আমরা।’

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন