নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দিতে যা বললেন নুর ও শামীম

  15-04-2019 09:15AM

পিএনএস ডেস্ক : ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার এজহারভুক্ত দুই আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম।

রোববার (১৪ এপ্রিল) বিকালে এই দুই আসামিকে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে ১৬৪ ধারায় পর্যায়ক্রমে দুই আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে আদালতে হাজির করা হয় নুর ও শামীমকে। এরপর দু’জনের জবানবন্দি গ্রহণ শুরু হয়, রাত পৌনে ১টা পর্যন্ত চলে তা।

মধ্যরাতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষ হয়েছে জানিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) তাহেরুল হক চৌহান।

তিনি বলেন, পিবিআই এ মামলার দায়িত্ব পাওয়ার চার দিনের মধ্যে (১০-১৪ এপ্রিল) আমরা ঘটনার মূল নায়ক, যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে, তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করেছি। তদন্তকারী কর্মকর্তা আইনের মধ্যে থেকে আদালতের কাছে তাদের হাজির করেছেন। আদালত দীর্ঘ সময় ধরে তাদের সিআরপিসির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। আসামি দু’জন আদালতের কাছে তাদের স্বীকারোক্তি উপস্থাপন করেছেন। তারা পুরো বিষয়টি খোলাসা করেছেন। একেবারে কিভাবে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে, কারা ঘটিয়েছে, কোন আঙ্গিকে ঘটিয়েছে, বিষয়গুলো এসেছে। দ্রুত আপনারা জানবেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, নুর ও শামীম অপরাধ স্বীকার করেছেন, হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। এখানে কয়েকজন সংশ্লিষ্ট ছিল, পরিকল্পনায় অংশ নিয়েছে। তারা জেলখানা (কারাগারে বন্দি হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা) থেকে হুকুম পেয়েছেন। এই বিষয়গুলোর বিস্তারিত বিবরণ এসেছে।

তাহেরুল হক চৌহান বলেন, হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত ১৩ জনের নাম পাওয়া গেছে। আরও কিছু নাম বিচ্ছিন্নভাবে এসেছে। আমরা সেসব যাচাই-নিরীক্ষা করবো।

যে চারজন আগুন দিয়ে নুসরাতকে পুড়িয়েছে, তারা গ্রেফতার আছে কি-না, জানতে চাইলে পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা দুইজনকে গ্রেফতার করেছি। বাকি দুই জনকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। শিগগির ভালো খবর পাবেন।

নুসরাত হত্যা মামলায় নুর উদ্দিন এজাহারভুক্ত দুই নম্বর ও শাহদাত হোসেন শামীম চার নম্বর আসামি। নূরকে ময়মনসিংহের ভালুকা এবং শামীমকে মুক্তাগাছা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই।

সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসারছাত্রী নুসরাত এবছর আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে ‘শ্লীলতাহানির’অভিযোগ এনে গত মার্চে সোনাগাজী থানায় একটি মামলা করে নুসরাতের পরিবার। সেই মামলা তুলে না নেওয়ায় অধ্যক্ষের অনুসারীরা গত শনিবার পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। শনিবার রাতেই ঢামেক হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সোমবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। গত বুধবার রাতে তার মৃত্যু হয়।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন