নায়িকা হতে না পেরে চুরির পেশায় নাম লেখান সুন্দরী নারী!

  27-05-2019 02:23PM

পিএনএস ডেস্ক : তানিয়া সিকদার। তার স্বপ্ন ছিল নায়িকা হওয়ার। কিন্তু নায়িকা হতে গিয়ে বিভিন্নভাবে প্রতারণার শিকার হন। একপর্যায়ে চুরির পেশায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। অল্পদিনেই হয়ে উঠেন চোরচক্রের প্রধান।

সম্প্রতি গোয়েন্দা পুলিশের জালে আটক হওয়ার পর এমন তথ্য দিয়েছেন সুন্দরী এ নারী।

পুলিশ জানিয়েছে, রাজধানীর ধনী পরিবারগুলোকে টার্গেট করে তাদের বিষয়ে সব খোঁজখবর নিয়ে বাসায় যেতেন তানিয়া। বাসার লোকজনদের বোকা বানিয়ে অভিনব উপায়ে সর্বস্ব লুট করতেন তিনি।

কখনও নদী, কখনও ডাক্তার নওশীন বা সাদিয়া রহমান নামে পরিচয় দিতেন তানিয়া সিকদার। তার হাবভাবে আভিজাত্যের ছাপ ছিল। চলাফেরা করতেন প্রাইভেট গাড়িতে। দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি চোর।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বেশ কয়েক বছর ধরে থাকেন সাবেক ব্যাংকার খলিলুর রহমান। গত ১৯ মে সন্ধ্যার আগে মেয়ের বান্ধবী পরিচয় দিয়ে বাসায় আসেন এক সুন্দরী তরুণী। বাসার ভেতরে ঢুকে সবাইকে বোকা বানিয়ে সব গহনা, টাকা লুট করে পালিয়ে যান ওই তরুণী।

খলিলুর রহমান জানান, ইন্টারকম ফোন করে বলে আমি আপনার মেয়ের বান্ধবী, বাসায় আসতে চাই। তার পর বাসায় এসে প্রায় ২০ হাজার টাকা ও গহনা নিয়ে পালিয়ে যায়।

তার ঠিক ১০ দিন আগে একই কৌশল অবলম্বন করে বসুন্ধরা এলাকার আরেকটি বাসায় যান এই নারী। সেখানে লন্ডনে থাকা জাবিরের বন্ধু পরিচয় দেন তার স্ত্রীর কাছে। ভুলিয়ে-ভালিয়ে বেডরুমের আলমারি থেকে নিয়ে যান প্রায় ৩০ ভরি স্বর্ণ, ডায়মন্ডের একটি আংটি ও দুটি নেকলেস ও একটি রূপার হার। সেই নারীর আসা-যাওয়ার সব দৃশ্য মেলে সিসিটিভি ক্যামেরায়।

এমন ঘটনায় বিস্মিত জাবিরের স্ত্রী ফারজানা তাসমী। বলেন, সে এত কনফিডেন্টলি কথা বলে; আমি তাকে সন্দেহ করার মতো কোনো সুযোগই পাইনি। অবস্থা এমন যে, আমি তাকে যে ধরনের প্রশ্ন করব সে তার উত্তর দিতেই তৈরি।

চোরচক্রের প্রধান তানিয়া সিকদার তানি বিভিন্নজনের কাছে প্রতারিত হওয়ার পরই এ পেশায় নেমেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তার ইচ্ছা ছিল নায়িকা হওয়ার। সেখান থেকেই মানুষ তাকে প্রতারিত করেছে। একপর্যায়ে বাধ্য হয়েই তিনি চুরির পেশায় নামেন।

পুলিশ জানিয়েছে, এর আগে আরও আটবার জেল খেটেছেন এ নারী।

চুরি করে আনা স্বর্ণ বিক্রি করা হতো উত্তরার মাসকাট প্লাজার একটি দোকানে। সেখান থেকে কিছু স্বর্ণ উদ্ধারও করা হয়। স্বর্ণ বিক্রিতে সহায়তা করে রেফায়েত নামে এক যুবক। রেফায়েতসহ তানিয়ার আরও চার সহযোগীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, এ নারী এর আগে আরও ১০-১২টির মতো চুরির ঘটনা ঘটিয়েছেন। দুবার সন্দেহজনকভাবে ধরা পড়ে জেল খেটেছেন। এবার প্রমাণসহ পুরো চক্র আটক হওয়ায় জোরালো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন