রমজানে মাছ-সবজির বাজারে আগুন!

  04-06-2018 04:23PM

পিএনএস ডেস্ক : মাহে রমজান আসার আগে থেকেই দেশের সকল সবজি বাজারে দামের প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে সকল সবজির এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম প্রতিনিয়িত বাড়তে থাকে। সে সাথে রমজানের মাঝামাঝিতেও মাছ এবং সবজির দামের বাজার অস্থিতিশীল রয়েছে। প্রায়ই সকল ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।

দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা নিয়মিত বৃষ্টিবাদলার জন্য সরবরাহ সংকটের কথা জানালেও রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কোনো ধরনের সবজির ঘাটতি লক্ষ করা যায়নি। ফার্মগেট তেজগাঁও কলেজের পাশের রাস্তায় ফুটপাতের ওপর বেশ কয়েকটি সবজির দোকান। প্রচুর মানুষ এখান থেকেই যাওয়া-আসার পথে বাজার করে।

হাতিরপুল ও সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি দোকানেই রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি। এর পরও দাম বেশি। সবগুলো দোকানেই নানা পদের সবজি বিক্রি হচ্ছে। দোকানগুলোতে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি করতে দেখা গেছে ৫০-৬০ টাকা কেজিতে। যদিও বেগুনের দাম রোজার শুরুর দিকে ৮০-১০০ টাকা হয়েছিল। সে হিসাবে দাম কমেছে। কিন্তু রোজার উত্তাপ লাগার আগে প্রতি কেজি বেগুনের দাম ছিল ৩০-৩৫ টাকা। সে হিসাবে এখনো দ্বিগুণ দামেই বিক্রি হচ্ছে এই সবজি।

এ ছাড়া প্রতি কেজি পটল ৪০-৫০ টাকা, ঝিঙা ৪৫-৫০ টাকা, কচুর লতি ৪০-৪৫ টাকা, শসা ৫০-৫৫ টাকা, টমেটো ৫০-৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০-৫০, কাঁচা মরিচ ৬০-৬৫ টাকা, করলা ৫৫-৬০ টাকা, কচুর মুখী ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বেশ কিছুদিন ধরে ৪৫ টাকায় বিক্রি হলেও সেটা কোনো কোনো বাজারে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। অর্থাৎ ফের পাঁচ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকাতেই বিক্রি হচ্ছে।

পুরনো সবজির পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে নতুন সবজিও। শুধু সমস্যা একটাই, চড়া দাম। এখানকার বিক্রেতা হোসেন বলেন, ‘ভাই, বৃষ্টিবাদলার মধ্যে সবজি আনা কষ্ট। দামও বেশি। এর ওপর আবার রমজান। সব মিলেই দাম বাড়তি।’ আলু কিনছিলেন গৃহিণী আছমা বেগম। তিনি বলেন, ‘রোজার আগে আলুর দাম ছিল ১৮-২০ টাকা। কয়েক দিন বাদে সেটা ২০-২৫ টাকায় গেল। আজকে (রবিবার) কিনলাম ৩০ টাকা কেজি।’

তবে অন্য বাজারগুলোতে ২৫ টাকাতেও বিক্রি করতে দেখা গেছে প্রতি কেজি আলু। রাজধানীর বিভিন্ন সুপারশপে ২০-২২ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করতে দেখা গেছে। কারওয়ান বাজারের সবজির আড়তদার নিয়াজ আলী জানান, ‘বৃষ্টির কারণে সবজির সরবরাহে একটু সমস্যা হচ্ছে। কিছুটা কমে গেছে। এ কারণে দাম কিছুটা বাড়তি। তবে দিন ভালো হলে দাম কমবে।’

রমজানে মাছ-মাংসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণেই বাজার চড়ে যায়। এই চড়া দামেই এখনো বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মাছ। গুদারাঘাট কাঁচাবাজারের মাছ মিক্রেতা আনিছ মিয়া দুই ধরনের মলা মাছ বিক্রি করছেন। একটির কেজি চাইছেন ৩৫০ এবং অন্যটি ৩২০ টাকা হলে নেওয়া যাবে বলে ক্রেতাদের একদাম বলে দিচ্ছেন।

আরেক বিক্রেতা ছোট-বড় ইলিশ বিক্রি করছেন। ৮৫০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জোড়া দাম চাচ্ছেন দুই হাজার-দুই হাজার ২০০ টাকা এবং এক কেজি ওজনের ইলিশের প্রতি জোড়ার দাম চাইলেন তিন হাজার ৫০০ টাকা।

রাজধানীর বাজারগুলোতে মাঝারি আকারের রুই মাছ ২৪০-২৫০ টাকায় এবং বড় আকারের রুই বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩২০-৩৪০ টাকায়। পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, টেংরা ৪৫০-৫০০ টাকা, মলা ৩০০-৩৫০ টাকা, দেশি শিং ও মাগুর ৬০০-৭০০ টাকা এবং চাষের শিং ও মাগুর ৪০০-৫০০ টাকা, সরপুঁটি ১৮০-২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০-১৩০ টাকা এবং কই ১৮০-২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এদিকে গরুর মাংসের দাম বেশির ভাগ জায়গায় নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলেও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। প্রতি কেজি মুরগি ১৫৫-১৬০ টাকা কেজি দরেই বিক্রি হচ্ছে। তবে কারওয়ান বাজারে ১৪৫-১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন