বিপাকে আদা-রসুন আমদানিকারকরা

  22-08-2018 06:14PM

পিএনএস : ঈদুল আজহা সামনে রেখে অতিরিক্ত আদা-রসুন আমদানি করে বিপাকে পড়েছেন দেশের আমদানিকারকরা। সরবরাহ চাপে দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে রসুনের দাম বাড়লেও দেশের বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে আদা-রসুন আমদানিকারক রয়েছেন অর্ধশতাধিক। তারা সারা বছরই দেশের চাহিদা অনুযায়ী আদা-রসুন আমদানি করেন। তবে এ বছর কোরবানির ঈদ সামনে রেখে অতিরিক্ত আদা-রসুন আমদানি করে লোকসানের মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা। তাদের দেয়া তথ্যমতে, সারা বছর আদা-রসুনের চাহিদা থাকলেও কোরবানির ঈদে এ পণ্য দুটির ব্যবহার অনেকটা বেড়ে যায়। এজন্য অধিক মুনাফার লোভে আদা-রসুন আমদানি বাড়িয়ে দেন আমদানিকারকরা। কিন্তু এ বছর অতিরিক্ত আমদানি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। সরবরাহ চাপে লোকসান দিয়ে তাদের পণ্য দুটি বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে পাইকারি ও খুচরা মূল্যের মধ্যে বড় ব্যবধান থাকায় ভোক্তাদের বেশি দামেই তা কিনতে হচ্ছে।

রাজধানীর পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের আমদানিকারক মেসার্স সুরমা বাণিজ্যালয়ের ঝুটন সাহা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রতি টন চীনা রসুন কেনা হয়েছে ৪২০-৪৪০ ডলারে। প্রতি ডলারের মূল্য ৮৩ টাকা ধরা হলে টনপ্রতি রসুনের দাম পড়ে ৩৪ হাজার ৮৬০ টাকা। এ হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়ে ৩৪ টাকা ৮৬ পয়সা। আর চীন থেকে শ্যামবাজার পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতি কেজি রসুনে খরচ পড়ছে ৪২-৪৩ টাকা। বর্তমানে এ রসুন তারা বিক্রি করছেন ৩৮-৪২ টাকায়।

আদা আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কিছুদিন আগেও প্রতি টন চীনা আদার দাম ছিল ৮৯০-৯০০ ডলার। এ হিসাবে প্রতি টন আদার দাম পড়ে ৭৩ হাজার ৮৭০ টাকা বা প্রতি কেজি ৭৩ টাকা ৮৭ পয়সা। এ আদা দেশে পৌঁছার পর আনুষঙ্গিক খরচসহ প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৮৫ টাকা। অথচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।

রাষ্ট্রয়াত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্যানুযায়ী, গত শনিবার প্রতি কেজি দেশী রসুন বিক্রি হয় ৫০-৭০ টাকায়, যা এক বছর আগে ছিল ৯০-১১০ টাকা। এ সময়ের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম কমেছে ৪০ শতাংশ। আর প্রতি কেজি আমদানিকৃত রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। এক বছর আগে দাম ছিল ১২০-১৪০ টাকা। এ সময়ের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম কমেছে ৪২ দশমিক ৩১ শতাংশ। আর প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৪০ টাকায়। এক বছর আগে যা বিক্রি হয় ৮০-১৩০ টাকায়। এ সময়ের মধ্যে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে রসুন উৎপাদন হয়েছে ৬ লাখ ৮৬ হাজার টন। আর আমদানি হয়েছে ৬৪ হাজার ৬৪৯ টন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪২ টন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে আদা উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার টন ও আমদানি হয়েছে ৯৮ হাজার ৬৭৩ টন এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ৬৯ হাজার ৬২০ টন আদা।

আমদানিকারকরা জানান, দেশে সারা বছর কী পরিমাণ আদা-রসুনের চাহিদা রয়েছে কিংবা কী পরিমাণ উৎপাদন হয়, এ-সংক্রান্ত কোনো সঠিক তথ্য সরকারের কাছে নেই। এ কারণে কখনো আমদানির পরিমাণ বেড়ে যায়, আবার কোনো সময় কমে যায়। এর প্রভাব পড়ে ভোক্তা ও আমদানিকারকের ওপর।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন