‘আগামী বাজেটে পরিবারের অন্তত একজনকে চাকরি’

  11-03-2019 01:11AM


পিএনএস ডেস্ক: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘প্রতিটি পরিবারের অন্তত একজনকে চাকরি দেয়ার ব্যবস্থা করব। এ কাজটি আগামী বাজেট থেকেই বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে। আমরা বিভিন্নভাবে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী নিয়ে কাজ করছি। পরিবারের একজনকে চাকরির ব্যবস্থা করতে পারলে নিরাপত্তা বেষ্টনীতে চাপ কমবে।’

আগামী (২০১৯-২০) অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে নীতিগত বিষয়সমূহের ওপর মতবিনিময়ের জন্য দেশের থিংক ট্যাংক প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা শেষে তিনি এ কথা বলেন। আজ (রোববার) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন ভ্যাট আইন আংশিকভাবে আগামী পহেলা জুলাই থেকে কার্যকর হবে। পুরো আইনটি বাস্তবায়ন করা হবে পর্যায়ক্রমে। আর বাজেট হবে সহজ ও সরল। যাতে সাধারণ মানুষ তা সহজে বুঝতে পারে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে অগ্রাধিকার দেয়া হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রফতানি, শিল্প ও প্রবৃদ্ধিকে।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাজেট হচ্ছে মানুষের জন্য। সাধারণ মানুষ যাতে বুঝে সেভাবে এভার বাজেট করা হবে। বাজেট বক্তব্য হবে ছোট। তবে বাজেটে টাকার অঙ্ক কমবে না। রাজস্ব আহরণ আগের তুলনায় বাড়বে। শুধু বাজেট বক্তব্যে কথা বার্তা কম হবে।’

আগামী বাজেটে নতুনত্ব কী থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নতুন হবে বাজেটকে সহজ করে উপস্থাপন করা।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি যেভাবে চলছে এটি অর্থনীতির জন্য সঠিক পথ নয়। এবার কাঠামোগতভাবে প্রত্যেক পরিবারের আয়ের পথ তৈরি করা হবে। এ জন্য প্রত্যেক পরিবার থেকে একটি মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করতে পারি। এতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসুচির ওপর চাপ কমে আসবে।‘
ভ্যাট আইন কার্যকর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পহেলা জুলাই থেকে তা কার্যকর করা হবে। তবে এটি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। শতভাগ সারাদেশে একসঙ্গে কার্যকর করতে পারব না। এটি কার্যকর করা হবে। তবে পুরোপুরি বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সময় দিতে হবে। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান পহেলা জুলাই থেকে কার্যকরে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দুটি বিষয়কে বেশি ফোকাস দেয়া হবে। এক হচ্ছে গ্রামকে শহর বানাব এবং যুব সমাজকে প্রকৃত অর্থনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’

সূত্র জানায়, আগামী (২০১৯-২০) অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের প্রক্রিয়া চলমান। জাতীয় বাজেট চূড়ান্ত করার আগে অর্থমন্ত্রী বাজেট প্রণয়নের নীতিগত বিষয়সমূহের ওপর খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। তার অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সভাটির আয়োজন করা হয়।

সভায় দেশের থিংক ট্যাংক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস), ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপ (ইআরজি), বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি (বিইএফ), পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদরা ছাড়া বাংলাদেশ জুট গুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর ধারাবাহিকভাবে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, এনজিও, মন্ত্রণালয়, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে একই বিষয়ে আলোচনায় বসবেন অর্থমন্ত্রী।

জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের জন্য প্রাথমিকভাবে বাজেটের আকার ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ২৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা বা সাড়ে ১৩ শতাংশ বেশি।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারকে মূলভিত্তি হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান, সামাজিক সুরক্ষা এবং বিনিয়োগ আকৃষ্ট এবারের বাজেটের অন্যতম লক্ষ্য। সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থানে। আগামী বাজেটে গ্রামীণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে থাকছে বিশেষ পদক্ষেপ।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন