শহীদ জোহা দিবস আজ

  18-02-2018 11:36AM

পিএনএস ডেস্ক: আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি। শহীদ ড. জোহা দিবস। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের এই দিনে ড. জোহা শহীদ হন। তিনিই প্রথম বাঙালী শহীদ বুদ্ধিজীবী।

ড. জোহার আত্মদান সামরিক শাসক আইয়ুব শাহীর পতনকে ত্বরান্বিত করেছিল। চলমান গণআন্দোলন রূপ নিয়েছিল গণঅভুত্থ্যানে। ড. জোহা হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সর্বস্তরের জনতা আইয়ুব শাহীর সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে।

ড. জোহা ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তৎকালীন প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের শিক্ষক। আইয়ুব শাহীর শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের আগলে রেখেছিলেন তিনি। নিজ ছাত্রদের জীবন রক্ষায় অকুতোভয় এই শিক্ষক পাক হানাদার বাহিনীর বন্দুকের সামনে দাঁড়ান। ছাত্রদের রক্ষায় এগিয়ে আসায় পাক বাহিনী তাকে গুলি করে হত্যা করে। সেদিন থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই দিনটি শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

এ বছর শহীদ জোহার ৪৯তম শাহাদাতবার্ষিকী পালনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

দিবসটি উপলক্ষে র‌্যালি, আলোচনা সভা, প্রদীপ প্রজ্জ্বালনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কর্মসূচির মধ্য রয়েছে- সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, পৌনে ৭টায় ড. জোহার মাজার ও তাঁর স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সাড়ে ৮টায় অফিসার সমিতি কার্যালয়ে আলোচনা সভা। বাদ জোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে কোরআনখানি ও মোনাজাত, শামসুজ্জোহা হলে সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করা হবে। এদিন শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। এছাড়া আগামী ২৭ ফেব্র্বয়ারি রাবির সিনেট ভবনে ‘ড. জোহা স্মারক বক্তৃতা’ অনুষ্ঠিত হতে হবে। এতে প্রধান বক্তা থাকবেন ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান।

উল্লেখ্য, ১৯৩৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের বাকুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন ড. শামসুজ্জোহা। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। ১৯৪৮ সালে বাকুড়া জেলা স্কুল থেকে ১ম বিভাগে মাধ্যমিক পাশ করেন। পরে ক্রিশ্চান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে স্নাতক ও ১৯৫৪ সালে স্নাকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে অর্ডিন্যান্স কারখানায় শিক্ষানবিশ সহকারী কারখানা পরিচালক হিসেবে কিছুদিন কাজ করেন। এরপর লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজ ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশেষ ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৬১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে যোগ দেন। শহীদ হওয়ার সময় তিনি স্ত্রী নিলুফা জোহা ও এক কন্যা সন্তান রেখে যান। দীর্ঘদিন ধরে তারা আমেরিকা বসবাস করছেন। এখন তারা সেখানকার নাগরিক হয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন বলে জানা গেছে।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন