সময়মতো ডাক্তার না আসায় ভোগান্তিতে রোগীরা

  03-05-2018 12:17PM

পিএনএস, রাবি থেকে আব্দুল কাইয়ুম: ঘড়ির কাটা তখন ৯.৪৫টা বাজে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে ২১ নম্বর রুমের সামনে রোগী লম্বা সিরিয়াল। খবর নিয়ে জানা গেল ডাক্তার না আসায় রোগীদের লম্বা সিরিয়াল হয়ে গেছে। সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকাদের একজন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ১ম বর্ষে শিক্ষার্থী মশিউর রহমান। তার সাথে কথা বললে অনেকটা অভিযোগের ভাষায় তিনি বলেন,“আমি সকাল পৌনে ৯টায় এখানে এসেছি ডাক্তার দেখাতে । আইডি না থাকায় এবং ৯.৪৫ ক্লাস থাকায় তাড়াতাড়ি আসি যাতে ডাক্তার দেখিয়ে ক্লাস করতে পারি । কিন্তু ডাক্তার সোয়া নয়টা আসার কথা থাকলেও ডাক্তার এখনো আসেনি। এদিকে আমার দ্বিতীয় ক্লাস শুরু হয়ে গেছে এখনো অনেক রোগী লম্বা সিরিয়াল। মনে হয় এই ক্লাসটাও করা হবে না। চিকিৎসা কেন্দ্রের ২৮ নাম্বার কক্ষ। এ কক্ষে রোগী দেখেন ড. জামান আরা সোহেলী ।

কিন্ত ডাক্তার এখনো না আসায় বাহিরে রোগীদের জটলা বেঁধে গেছে। ডাক্তার দেখাতে আসা রোগীদের একজন জিওগ্রাফি ডির্পাটমেন্টের মার্স্টাসের শিক্ষার্থী মাহমুদুল যিনি ৯টায় এখানে এসেছে যাতে করে দ্রুত ডাক্তার দেখিয়ে লাইব্রেরির রিডিং রুমে যেতে পারে ।

কিন্তু পৌনে ১০টা বাজল তখনো ডাক্তার না আসায় চিন্তিত হয়ে পড়েছে তিনি কারণ দশটার মধ্যে রিডিং রুমে না প্রবেশ করলে পরে জায়গা পাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়বে । রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা- কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় ৩৬ হাজার মানুষের বসবাস। তাদের সবার চিকিৎসার জন্য একমাত্র প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্র। বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেয়ার পর ব্যাপক উন্নতি সাধিত হলেও কিন্তু ডাক্তার নিয়মিত না আসা, দিনের পর দিন ছুটিতে থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে ৪০০-৫০০ টাকা খরচ করে বাইরে ডাক্তার দেখাতে হচ্ছে। ডাক্তারদের ছুটিতে থাকা রবিষয়টি স্বীকার করলেও সময়মতো চিকিৎসাকেন্দ্রেনা আসার কথামানতে রাজি নয় চিকিৎসাকেন্দ্রের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ড.আব্দুল ওয়াদুদ। তিনি বলেন, ‘ অধিকাংশ ডাক্তারা বাজারের দিকে থাকে । রাস্তায় আসা যাওয়ার সময় মাঝে মধ্যে জ্যামে পড়তে হয়। ফলে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট দেরি হয়।’ কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল ডাক্তার ৯.১৫ আসার কথা থাকলেও আসে দশটায়। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একমধ্য বয়সী পুরুষ পিয়ারুলের সাথে কথা বললে জানান, তৃতীয় শ্রেণী পড়ুয়া তার মেয়ে সানজিদাকে নিয়ে এসেছেন তিনি । তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে চাকরি করেন। তিনি অফিস থেকে ছুটি নিয়েছে সকাল দশটা পর্যন্ত । ধারনা করেছিলেন এরই মধ্যে ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় দিয়ে আসবেন মেয়ে সানজিদাকে কিন্ত তখনো ডাক্তার না আসা তিনি অনেকটা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কখন ডাক্তার দেখিয়ে মেয়েকে বাসায় দিয়ে অফিসে যাবেন। এ প্রসঙ্গে চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক ড. তবিবুর রহমান শেখ বলেন, ‘ এক সময় ডাক্তার ৯টায় আসার কথা থাকলেও ১১টায় আসত। কিন্তু বর্তমান ভিসি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে সেচিত্র পাল্টে গেছে। ডাক্তাররা সময়মতো আসে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘ডাক্তারদের ছুটির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় একটি নিদিষ্ট নিয়ম-কানুন রয়েছে। সেই নিয়মে অধীনে যদি কেউ ছুটিতে থাকে তাতে আমার কিছু করার থাকে না। আর এই নিয়মের বাইরে যদি কেউ ছুটিতে থাকে তবে আমরা তার বিষয়ে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন