রাসিক নির্বাচন : মেস বন্ধের ঘোষণা, বিপাকে শিক্ষার্থীরা

  25-07-2018 08:46PM

পিএনএস, রাবি সংবাদদাতা : আসন্ন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজশাহীর অধিকাংশ মেস বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে মেস মালিকরা। আজ বুধবার সন্ধা ৬টার মধ্যে মেস ত্যাগ করার নিদের্শ দিয়েছেন তারা। এদিকে মেস বন্ধের ঘোষণা দিলেও খোলা থাকছে রাবি, রুয়েট ও রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ নগরীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এতে বিপাকে পড়েছে প্রতিষ্ঠান গুলোতে অধ্যয়নরত হাজার-হাজার শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরীরর মোল্লা ভবন, মায়া, আরএস, রিভারভিউ, আতিক, জামান ছাত্রাবাসগুলোর প্রতিটিতেই প্রায় পাঁচশ’র মতো শিক্ষার্থী থাকেন। এ ছাড়াও অন্য ছোট মেসগুলোতে কমপক্ষে তিনশ করে শিক্ষার্থী থাকেন। নির্বাচনকালীন রাজশাহীতে ভোটার ব্যতিত অন্য কেউ অবস্থান করতে পারবে না এমন ঘোষণা দিলে মেস মালিকরা মেস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন। তবে অভিযোগ রয়েছে- পুলিশ ও মেস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মেস বন্ধের কোন নির্দেশনা না আসলেও মেস মালিকরা নিজেদের সিদ্ধান্তেই মেস বন্ধ দিয়েছেন।

মেসগুলোতে অবস্থানকারী শিক্ষর্থীরা অভিযোগ করে বলেন, আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে মেস ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ মেস বন্ধ হওয়ায় তারা আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। এই সময়ে অনেকের ক্লাস-পরীক্ষাও রয়েছে। সামনে ঈদের ছুটি। মালিকরা তাদের সুবিধার্তে পুলিশের ঘোষণাকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে শিক্ষার্থীদের মেস ছাড়তে বলছেন।

জানা যায়, নির্বাচনকালীন মেসে পুলিশি তল্লাসি হতে পারে এমন আশঙ্কায় বিএনপি-জামায়েতপন্থী মেস মালিকারাই মেস বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে যেসব মেসগুলোতে তল্লাশি হয় সেগুলোতে পরবর্তীতে আর কোন শিক্ষার্থী আসতে চায় না বলে তাই তারা মেসগুলো বন্ধ করে দিয়েছেন বলে জানা যায়।

মোল্লা ছাত্রাবাসের মেহেদী হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের মেস মালিক সবাইকে মেস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচনের সময় সমস্যা হবে জানিয়ে তিনি মেস বন্ধ করেছেন। এতে নির্বাচনকালীন ক্লাস-পরীক্ষাগুলোয় অংশ নিতে পারবো না।’

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী আমিনা খাতুন বলেন, ‘রাজশাহীতে কোন আত্মীয়-স্বজন নেই। কোচিংয়ে প্রতিদিনই পরীক্ষা থাকে। পড়ার চাপও অনেক। আবার পাঁচদিন ক্লাস মিস গেলে অনেক পিছিয়ে পড়বো। ভর্তি পরীক্ষারও বেশি সময় নেই। কিন্তু এর মধ্যে মালিক মেস ছাড়তে বলেছেন। এমতাবস্থায় কি করব বুঝতে পারছি না।

তবে অধিকাংশ মালিক মেস বন্ধের ব্যাপারটি অস্বীকার করেন। তারা জানান, শিক্ষার্থীদের জোর করে মেস ছাড়তে বলা হয়নি। তারা নিজ ইচ্ছায়ই মেস ছাড়ছেন।

নগরীর হাবলার মেসের মালিক আবু ওয়াহিদ বলেন, ‘মেস বন্ধের কোন নির্দেশ আমি দেইনি। আশেপাশের মেসগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়ায় আমার মেসের শিক্ষার্থীরাও চলে গিয়েছে।’ অন্য মেস মালিকদের সঙ্গে কথা বললে তারাও একই দাবি করেন।

মেস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন বলেন, ‘আমরা কোন মালিককে মেস বন্ধ করতে বলিনি। যারা বন্ধ করছেন তারা নিজ উদ্যোগেই বন্ধ করছেন।’

জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতেখায়ের আলম বলেন, ‘মেস বন্ধের কোন ঘোষণা দেইনি। নির্বাচনের সময় মেস বর্ডার ব্যতীত অন্য কারও মেসে অবস্থানের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে রাজশাহী অঞ্চলের উপ-নির্বাচন কমিশনার ও সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার সৈয়দ আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিধি অনুযায়ী বহিরাগতদের অবস্থানের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে আমরা আলাদাভাবে মেস বন্ধের ঘোষণা দেইনি।’

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন