ঢাবিতে শিক্ষককে ‘টাকলু’ বলায় বহিষ্কার: কী ছিল সেই ‘অসদাচারণ’?

  31-07-2018 07:11PM

পিএনএস ডেস্ক : শিক্ষকের নাম উল্লেখ না করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষককে নিয়ে করা ব্যঙ্গাত্মক পোস্টের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের ঘটনায় বিস্মিত হয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

যেই শিক্ষার্থীর ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা, মনোবিজ্ঞান বিভাগের সেই শিক্ষার্থী খায়রুন নেসা বলেন সামান্য একটি বিষয়ে যে তাকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হবে তা তিনি চিন্তাও করেননি।

পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষকের সাথে অসদাচরণের অভিযোগ অস্বীকার করে মিজ. খায়রুন নেসা বলেন, "আমরা দেখাদেখি করে পরীক্ষা দিচ্ছি, এমন অভিযোগে স্যার আমার ও আরেকজন শিক্ষার্থীর খাতা নিয়ে যায়।"

"স্যারকে বেশ কয়েকবার অনুরোধ করার পরও তিনি খাতা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান। তারপর বেশ কিছুক্ষণ সিটে বসে থেকে চলে আসার সময় প্রশ্নপত্র ছিঁড়ে চলে আসি আমি।"

এরপর ফেসবুকে পোস্ট করে নিজের ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন বলে জানান মিজ. খায়রুন নেসা।

তার এই পোস্টে মন্তব্য করেন তার বিভাগের কয়েকজন বন্ধু। তবে তারাও কোনো শিক্ষকের নাম উল্লেখ করেন নি বলে জানান মিজ. খায়রুন নেসা।

"বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের মনের দু:খ, ক্ষোভ প্রকাশ করার উদ্দেশ্যেই আমার ঐ পোস্টে বন্ধুরা মন্তব্য করেছে। মনের ভার হালকা করার জন্যই এই পোস্ট। এর পেছনে আমাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্যই ছিল না।"

মিজ. খায়রুন নেসা জানান, তাদের ফেসবুকের মন্তব্য নিয়ে তদন্তের অংশ হিসেবে ৬ই জুলাই প্রক্টরের কার্যালয়ে ডাকা হয় তাদের।

"আমাদের বাড়াবাড়ি হয়েছে স্বীকার করে ৬ই জুলাই প্রক্টরের অফিসে গিয়ে আমরা সবাই ক্ষমা চেয়েছি। আমার ভেবেছিলাম সেখানেই বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। কিন্তু বহিষ্কারের মত শাস্তি দেয়া হবে তা আমরা ভাবতেও পারিনি।"

বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের পর শাস্তি পাওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী ঐ শিক্ষকের কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইলেও তিনি তাদের কোনো সহায়তা করতে পারবেন না বলে জানান।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করার কারণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী বলেন, "পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে তাদের আচরণ অসন্তোষজনক ছিল। পরবর্তীতে তারা সামাজিক মাধ্যমে আপত্তিকর ভাষায় ঐ শিক্ষক সম্পর্কে কটূক্তি করে এবং হুমকিও দেয়।"

মি. রব্বানী বলেন, সামাজিক মাধ্যমে শিক্ষককে ব্যঙ্গ করে 'টাকলু' বলা এবং তাঁকে 'মারা দরকার', 'হাত নিশপিশ' এধরণের আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রবিবার লিখিতভাবে সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেয়া হয়।

তবে ঐ তদন্ত কমিটিতে মনোবিজ্ঞান বিভাগের কোনো কর্মকর্তাকে রাখা হয়নি বলে জানান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহফুজা খানম।

মিজ. খানম বলেন, "কি ঘটনা ঘটেছে বিস্তারিত কিছুই জানি না। আমি শুধু জানি শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে বিভিন্নভাবে কটুক্তি করেছিল এবং তা পরবর্তীতে প্রক্টরকে জানানো হয়।"

তবে প্রক্টরের কার্যালয় কিসের ভিত্তিতে তদন্ত করেছে এবং তাদের কার্যপ্রণালী কি ছিল সেসম্পর্কে কোনো ধারণা নেই বলে জানান মিজ. খানম।

তিনি বলেন, "আমরা শুধু বিজ্ঞপ্তিটি পেয়েছি যেখানে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মেয়াদে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে।"-বিবিসি

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন