সমাবর্তন শিক্ষার সমাপ্তি নয়, উচ্চতর শিক্ষার দ্বার উন্মোচন: রাষ্ট্রপতি

  29-09-2018 07:13PM

পিএনএস, রাবি প্রতিনিধি : মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আব্দুল হামিদ বলেছেন, ‘সমাবর্তন যেকোনো শিক্ষার্থীর জীবনের অন্যতম পাওয়া। মনে রাখতে হবে সমাবর্তন শিক্ষার সমাপ্তি ঘোষণা করছে না, বরং উচ্চতর জ্ঞানভান্ডারে প্রবেশের দ্বার উন্মোচন করছে। তোমরা আজ একটি পর্যায়ে চলে এসেছ। এখানে আসার ক্ষেত্রে তোমাদের পরিবারের পাশাপাশি দেশ ও জনগণের অবদান রয়েছে। তাই তোমাদের মেধা কর্মদিয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে হবে। ’শনিবার বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়ামে আয়োজিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ইতিহাস অত্যন্ত গৌরবের। শহীদ ড. শামসুজ্জোহাসহ আরও অনেক শিক্ষকের রক্তের সাক্ষী এই বিশ্ববিদ্যালয়। গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “ উচ্চ ডিগ্রি অর্জন শেষে আপনারা এখন নতুন এক জায়গায় এসে পৌঁছেছেন। সামনে আপনাদের উজ্জল ভবিষ্যত। আপনাদের এই পর্যায়ে আসার জন্য এদেশের জনগণের অনেক ভূমিকা রয়েছে। তাই আপনাদেরও তাদের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে।”এ সময় গ্রাজুয়েটদের জনগণের কল্যাণে, দেশের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা অধ্যাপক ইমেরিটাস আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সার্বিক পরিবেশ সম্পূর্ণ সুস্থ এবং আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ও নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় হচ্ছে না এমন দাবি করি না। শিক্ষকদের পাঠদানে অবহেলা, যথাসময়ে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে না পারা কিংবা পক্ষপাতমূলক ও অবাঞ্ছিত আচরণের অভিযোগ শোনা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের একটি প্রতিবেদন ক্যাম্পাসের শিক্ষক ও ছাত্রদের দলীয় রাজনীতির অকল্যাণকর প্রভাব, সেশনজট সংস্কৃতির কারণে শিক্ষা জগতে নৈরাজ্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাজে ও চিন্তায় স্বচ্ছতায় ও জবাবদিহিতার অভাব উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য অর্জনের বাধা বলে চিহ্নিত। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুধু উচ্চশিক্ষার মানের অবনতি হয়নি, পরীক্ষা পদ্ধতিও বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। অবস্থা এমন যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক অন্যের মূল্যায়নের উপর আস্থা রাখতে চায় না।’

এর আগে দুপুর সাড়ে তিনটায় রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়ে আগমন করেন। এসময় তাকে বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে উষ্ণ অভ্যর্থনা ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে বিকাল ৪টার দিকে রাষ্ট্রপতি সমাবর্তন অনুষ্ঠানের শুরুর আগে দুটি আবাসিক হলের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে দুই প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ও সেলিনা হোসেনকে বাংলা সাহিত্যে কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি ডিলিট উপাধি প্রদান করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আব্দুল বারীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য স্বাগত দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর আব্দুস সোবহান। পরে সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন