পরীক্ষার নীতিমালায় জানা নেই ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের!

  05-12-2018 05:11AM

পিএনএস ডেস্ক :স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন নেয়া নিষেধ ছিল। তবুও মোবাইল নিয়ে পরীক্ষার হলে যায় রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নুন স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারী (১৪)। মোবাইলে নকল করার অপরাধে মোবাইল নিয়ে তাকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়।

পরদিন মা-বাবাকে ডেকে অপমান করে তাকে টিসি (বদলি আদেশ) দেয়ার কথা বলা হয়। এতে অপমান ও লজ্জাবোধে বাসায় ফিরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে অরিত্রী। সোমবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শান্তিনগর ২৩/২৪ নম্বর বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারীর ভাষ্যে, অরিত্রীর স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। রোববার (২ ডিসেম্বর) পরীক্ষা দেওয়ার সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের স্কুলে যেতে বলে। স্কুলে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ জানায়, অরিত্রী পরীক্ষার হলে মোবাইলের মাধ্যমে নকল করছিল। তাই তাকে টিসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ খবর শোনার পর স্কুল থেকে অরিত্রী বাসায় ফিরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

দিলীপ বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে আমাকে অপমান করেছে এবং জানিয়েছে অরিত্রী পরীক্ষা দিতে পারবে না। এ মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে বাসায় ফিরে আত্মহত্যা করেছে। আর সহপাঠীর আত্মহত্যার ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার ও অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস বলেন, পরীক্ষার হলে ওই ছাত্রীর সঙ্গে এমন কোনো ব্যবহার করা হয়নি যাতে সে আত্মহত্যা করবে। শাখা প্রধান (প্রভাতী শাখার প্রধান জিন্নাত আরা) আমাকে বলেছেন, অন্য শিক্ষার্থীর বেলায় যে নিয়ম তার বেলায়ও একই নিয়ম প্রয়োগ করা হয়েছে।

নিয়মটা কী? প্রশ্ন করা হলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, আসলে নিয়মটা আমার জানা নেই। পরীক্ষায় কেউ নকল করলে তার শাস্তি কী হওয়া উচিৎ এটা আমার জানা নেই। তবে আমরা অভিভাবককে ডেকে তার সামনে এ বিষয়ে কথা বলি। ওই দিনের পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়।

তাহলে পরের দিন কেন অরিত্রীর পরীক্ষা নেওয়া হলো না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি মন্তব্য করেননি। নাজনীন ফেরদৌস বলেন, শাখা প্রধান আমাকে বলেছেন, নকল পাওয়া গেলে কোনে পরীক্ষা নেওয়া হয় না। এর বেশি আমার জানা নেই। এটা প্রচলিত নিয়ম।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন