‘ছাত্রলীগ মিথ্যা গল্প ফেঁদেছে-চ্যালেঞ্জ দিলাম, তদন্তে বাধা নেই’

  14-09-2019 06:49PM

পিএনএস ডেস্ক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেছেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ছাত্রলীগ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা গল্প ফেঁদেছে। এ বিষয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি এ ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও আচার্যকে অনুরোধ জানিয়েছেন। বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা চিঠিতে ছাত্রলীগ মিথ্যা গল্প ছুড়েছে।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করে উপাচার্য বলেন, ছাত্রলীগ মিথ্যা গল্প ছুড়েছে। আমি তাদেরকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলাম। তদন্তে আমার কোনো সমস্যা নেই।

তিনি বলেন, ‘অর্থ লেনদেনের বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট একটি গল্প। টাকা পয়সা নিয়ে তাদের সাথে আমার কোনো কথা হয়নি। তারা তাদের মতো করে কাজ করে। তারা কার কাছে কমিশন পায় বা না পায় তা আমি জানি না। এ বিষয়ে তারা (ছাত্রলীগের দুই নেতা) আমাকে ইঙ্গিত দিলে আমি বলেছি, তোমরা টাকা পয়সা নিয়ে কোনো আলাপ আমার সাথে করবে না। তোমরা যা চাও তা তোমাদের মতো কর।

উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, তাদের (ছাত্রলীগ) মূল উদ্দেশ্য ছিল যে তারা ঠিকাদারের কাছ থেকে কিছু কমিশন নেবে। তারা এ বিষয়ে আমাকে ইঙ্গিত দিয়েছে। কিন্তু আমার কাছে এসে তারা হতাশ হয়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে খোলা চিঠি লিখেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

প্রধানমন্ত্রী বরাবর ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী যে খোলা চিঠি দিয়েছেন, সে বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘তারা মিথ্যা গল্প ফেঁদেছে। আমি তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলাম। এ বিষয়ে আমি তদন্ত করতে বলব মাননীয় আচার্যের কাছে আমি যাব।

আপনাকে নিয়ে ছাত্রলীগ কেন মিথ্যা কথা বলবে—এ প্রশ্নের জবাবে জাবি উপাচার্য বলেন, আমি দুর্ভাগ্যক্রমে শেষ তীর ছিলাম, এটা হয়তো আমার দিক থেকেই গেল। তার পটভূমি পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পটভূমিতে যেন তার প্রিয় ছাত্রলীগের পচন না ধরে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী তদন্ত শুরু করেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ হয়তো আমারটা দিয়ে শেষ হয়ে গেল। তারা (ছাত্রলীগ) এ পটভূমি করেছে এটা থেকে বাঁচতে। তাই ক্যাম্পাসের আন্দোলনের সঙ্গে বিষয়টি জড়িয়ে দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘ক্যাম্পাসে আন্দোলনের মাধ্যমে কিছু মানুষ আমাকে দুর্নীতিবাজ বানাতে চাচ্ছে। তাই আমি চাই দুর্নীতি যে-ই করুক, তার তদন্ত হোক। যে বা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান নষ্ট করেছে, তার তদন্ত হোক। হয়তো আমার দুর্নীতি বের করতে গিয়ে অন্য কিছু বেরিয়ে আসবে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও তার পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম ধাপের ৪৫০ কোটি টাকার মধ্যে ২ কোটি টাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মধ্যে ভাগাভাগি করে দেয়া হয়—এমন খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের এ অভিযোগ তদন্তসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় ক্যাম্পাসে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন উপাচার্য। গত বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তিনি।

আলোচনায় আন্দোলনকারীদের দুই দফা দাবি মেনে নিলেও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগের বিষয়ে আগামী বুধবার পর্যন্ত সময় নেন।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন