বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা

  16-10-2019 01:28PM


পিএনএস ডেস্ক: ভিসি, প্রোভিসি ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পদ শূন্য থাকায় চরম সঙ্কটের মধ্যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ১৮ ও ১৯ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. মো: মুহসিনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তা সাময়িকভাবে স্থগিতের ঘোষণা করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভর্তি পরীক্ষার পরবর্তী তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেয়া হবে। এ ছাড়া চলমান এ সঙ্কটের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীনকে তার দাফতরিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সূত্র মতে, শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে গত ২৬ মে তৎকালীন ভিসি প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হক ছুটিতে যান। এরপর ট্রেজারার এ কে এম মাহবুব হাসানকে ভিসির দায়িত্ব দেয়া হয়। গত ৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি এ কে এম মাহবুব হাসানের ট্রেজারারের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনিও বিদায় নিয়েছেন। এর ফলে সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করে।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, ভিসিসহ অপর গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য থাকায় যে যার মতো দায়িত্ব পালন করছেন। যে কারণে শিক্ষকদের দলাদলিতে ভেঙে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো। দুর্গা পূজার ছুটি কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর সবাই যেন ভিসি, এমনটাই মনে হচ্ছে কার্যক্রমে। কেউ কাউকে মানছে না এবং কেউ কারোর কথাও শুনছে না। বন্ধ রয়েছে সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল ও ফিন্যান্স কমিটির কার্যক্রম। কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না। ফলে ইতোমধ্যে সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান আবু জাফর মিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য থাকায় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। এই অতি দ্রুত অভিভাবকহীন অবস্থায় থাকা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দিয়ে সার্বিক অগ্রযাত্রাকে সমুন্নত রাখতে না পারলে পরবর্তীতে তা কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটি সদস্য প্রফেসর ড. মো: মুহসিন উদ্দীন বলেন, নতুন ভিসি নিয়োগ হলে আশা করি সকল সমস্যা অচিরেই সমাধান হবে। এ অবস্থায় দ্রুত ভিসি নিয়োগের দাবি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। তিনি আরো বলেন, যদি দ্রুত ভিসি নিয়োগ দেয়া না হয় তাহলে ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হবে। সৃষ্টি হবে সেশনজট। বন্ধ হয়ে যেতে পারে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন।

সূত্র মতে, বর্তমানে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাত হাজার ৭০০ জন। আর শিক্ষক ১৮০ জন, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা ২১২ জন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলমান সঙ্কটের মধ্যেই নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীনের বিরুদ্ধে সরকারি অসঙ্গতিপূর্ণ কাগজপত্রে বিভিন্ন বিল দেয়ার জন্য অর্থ ও হিসাব দফতরের সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমানকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও অনৈতিক চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগ উঠেছে। অতি সম্প্রতি এ অভিযোগ আতিকুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীনকে তার দাফতরিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে ঘটনার তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীন জানান, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, যা সঠিক তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন