মুখ দিয়ে লিখেই জিপিএ-৫ পেয়েছে লিতু

  01-01-2020 01:09AM

পিএনএস ডেস্ক: হাত-পা ছাড়াই জন্ম নেয়া মেয়েটি মুখে দিয়ে লিখেই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। নাম তার লিতুন জিরা।

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে সে। এবার উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নেয় লিতুন জিরা।

লিতুন জিরা পরনির্ভর হয়ে সমাজের বোঝা হতে চায় না। লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হতে চায় জন্ম থেকে দুই হাত-পা ছাড়া জন্ম নেয়া মেয়েটি। জীবনের প্রথম প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় মেধার সাক্ষর রেখেছে সে।

শুধু তাই নয়,সম্প্রতি মণিরামপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধাতালিকায় স্থান পায় লিতুন জিরা।

স্থানীয়রা জানান, লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহী লিতুন জিরা প্রখর মেধাবী। হুইল চেয়ারেই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে এ-প্লাস পেয়ে লিতুন জিরা মেধার সাক্ষর রাখল।

মেধাবী এ শিক্ষার্থীর বাবা উপজেলার এ আর মহিলা কলেজের প্রভাষক। তিনি ১৭ বছর ধরে ওই কলেজে চাকরি করলেও আজো কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়নি। তার বাবাই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। কিন্তু বেতন না পাওয়ায় খুব কষ্টে তাদের সংসার চলে।

লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম বলেন, জন্মের পর মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা চিন্তা ছিল তাদের। এখন মেয়ের মেধা তাদের আশার সঞ্চার করেছে। লিতুন জিরা আর ১০ জন শিশুর মতো স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া-দাওয়া, গোছল সবকিছুই করতে পারে। মুখ দিয়েই লিখে সে। তার চমৎকার হাতের লেখা যে কারো দৃষ্টি কাড়বে।

একসময় যখন হাত-পা ছাড়াই জন্ম নিয়েছিল মেয়েটি, তখন পিতা মাথার চোখের পানির কারণ ছিল সে। এখন মেয়ের কারণে আবারও তাদের চোখে পানি আসে। তবে সেটা দুঃখের নয়, বড়ই আনন্দের।

লিতুন জিরার প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন, তার ২৯ বছর শিক্ষকতা জীবনে লিতুন জিরার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর দেখা পাননি। এককথায় সে অসম্ভব মেধাবী। শুধু লেখাপড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অন্যদের থেকে অনেক ভালো সে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন