পিএনএস ডেস্ক : প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্মিত ছবির অভিনেত্রী স্টর্মি ড্যানিয়েলস মামলা করতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।
ড্যানিয়েলস দাবি করছেন যে ট্রাম্পের সাথে তার সম্পর্ক ছিলো যা শুরু হয়েছিলো ২০০৬ সালে যদিও তা প্রত্যাখ্যান করেছেন মিস্টার ট্রাম্প।
কিন্তু তাদের মধ্যকার এ গল্পটি গুরুত্বপূর্ণ কেন? এবং এ সম্পর্কে কি জানা দরকার ?
কে এই স্টর্মি ড্যানিয়েলস?
তার এখনকার পরিচিত পর্ণ তারকা বা প্রাপ্তবয়স্কদের ছবির অভিনেত্রী হিসেবে, তবে তার প্রকৃত নাম স্টেফানি ক্লিফোর্ড।
যুক্তরাষ্ট্রের লুজিয়ানায় ১৯৭৯ সালে জন্মগ্রহণ করেছেন তিনি।
পর্ণ ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি সম্পৃক্ত হন ২০০৪ সালে, সেখানে তার নাম স্টর্মি ড্যানিয়েলস।
হুইস্কির নামকরা ব্র্যান্ড জ্যাক ড্যানিয়েলস থেকে একটি অংশ তিনি নিজের নামের সাথে বেছে নিয়েছেন নিজেই।
নির্বাচনে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন?
একবার নির্বাচনে দাঁড়ানোর কথাও ভেবেছিলেন এই পর্ণ তারকা। লুজিয়ানায় সিনেট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা চিন্তা করেছিলেন তিনি। কিন্তু পরে সে চিন্তা থেকে সরে আসেন। আর এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন যে তার প্রার্থিতাকে গুরুত্ব সহকারে নেয়া হচ্ছেনা।
তার অভিযোগ কী?
এটা জানার জন্য ফিরে যেতে হবে ২০১৬ সালের জুলাইয়ে।
স্টর্মি জানান তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে দেখা করেছেন একটা চ্যারিটি গলফ টুর্নামেন্ট চলার সময়। এটা হচ্ছিলো ক্যালিফোর্নিয়া ও নেভাডার মাঝে একটা রিসোর্ট এলাকায়।
এর আগে এক সাক্ষাতকারে তিনি জানান যে মিস্টার ট্রাম্প তাকে ডিনারে নিমন্ত্রণ করেছিলেন এবং তিনি তার হোটেলের রুমে তার সঙ্গে দেখা করেন।
সেখানে তাদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক হয়েছিলো বলে দাবি করেন স্টর্মি।
যদিও মিস্টার ট্রাম্পের আইনজীবী এটি পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তবে স্টর্মি ড্যানিয়েলসের দাবি যদি সত্যি হয় তাহলে ঘটনাটি ঘটেছিলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের কনিষ্ঠ পুত্র ব্যারনের জন্মের মাত্র চার মাসের মধ্যে।
আর কি কি বলছেন স্টর্মি ড্যানিয়েলস?
স্টর্মির দাবি মিস্টার ট্রাম্প তাকে তার টিভি শোতে নেয়ার কথা বলেছেন।
তিনি বলছেন মিস্টার ট্রাম্পের সাথে থাকার সময় একটি প্রামাণ্যচিত্রও দেখেছিলেন।
দু জনের মধ্যে অনেক বছর ধরেই কথা হচ্ছিলো দাবি করে তিনি আরও জানান ২০১০ সালে যখন তিনি সিনেটে নির্বাচনের পরিকল্পনা বাদ দেন সেই সময়ে দুজনের মধ্যে শেষবার কথা হয়।
যদিও এ সম্পর্ক নিয়ে গুজব তৈরি হয় ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়।
তাহলে এতদিন পর একটি এখন খবর কেন?
গত কয়েকমাস ধরে এ খবরটি হচ্ছে। জানুয়ারিতে ওয়াল স্ট্রীট জার্নালে একটি আর্টিক্যাল প্রকাশিত হয়েছিলো যেখানে দাবি করা হয় যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন ২০১৬ সালের অক্টোবরে অর্থাৎ নির্বাচনের ঠিক এক মাস আগে মিস ক্লিফোর্ডকে (স্টর্মি ড্যানিয়েলস এর প্রকৃত নামে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দেন।
মিস্টার কোহেন এটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। যদিও পরে ফেব্রুয়ারি মাসে এসে তিনি টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করেন তবে দাবি করেন যে ট্রাম্প বা তার সংশ্লিষ্ট কেউ জানতেননা।
জার্নালটির দাবি এ অর্থ দেয়া হয়েছে একটি অপ্রকাশিত চুক্তির আওতায় যেখানে শর্ত ছিলো যে মিস ক্লিফোর্ড মিস্টার ট্রাম্পের সাথে সম্পর্কের বিষয়ে কিছু প্রকাশ করবেননা।
হোয়াইট হাউজ অবশ্য বলছে এগুলো পুরনো খবর যা নির্বাচনের আগে প্রকাশিত হয়েছিলো এবং এগুলো প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
মিস ক্লিফোর্ডের আইনজীবী টুইট করে জানান তারা এ নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতে গেছেন।
আর বুধবার হোয়াইট হাউজ দাবি করে মামলায় ট্রাম্প জিতেছেন এবং তাতেও ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কেমন?
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও স্টর্মি ড্যানিয়েলস এর মধ্যকার ঘটনাপ্রবাহ অনেকদূর এগোলেও অনেকটাই চুপ রিপাবলিকান শিবির।
তবে সাউথ ক্যারেলাইনার কংগ্রেসম্যান মার্ক স্যানফোর্ড ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন এটি 'গভীর সমস্যা'।
অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটদের তরফে অনেকেই মিস ড্যানিয়েলসকে অর্থ দেয়ার ঘটনাটিকে তদন্ত করার জন্য এফবিআইয়ের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর কি কোন প্রভাব পড়বে?
অভিযোগটি ক্রমশই জোরদার হচ্ছে এবং এটি আলোচনা থেকে সরে যাওয়ার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা।
একদিকে রাশিয়া নিয়ে তদন্ত চলছে।
অন্যদিকে মিস্টার ট্রাম্পের সহযোগীদের অনেকেই তাকে ছেড়ে যাচ্ছেন বা কেউ নজরদারিতে আছেন।
এটাকে আলোচনা থেকে সরাতে হোয়াইট হাউজের দরকার আরেকটি স্ক্যান্ডাল,এমন মতও আসছে?
অনেকে মনিকা লিউনস্কির সাথে সম্পর্কের বিষয়ে মিথ্যা বলায় অভিশংসনের মুখোমুখি হয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, সে উদাহরণও তুলছেন।
এখন প্রশ্ন উঠছে বিল ক্লিনটনের মত কি কোন বিপদে পড়তে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ?
পিএনএস/জে এ /মোহন
পর্ণ অভিনেত্রীর অভিযোগ : বিপদে পড়বেন ট্রাম্প ?
11-03-2018 05:05PM