অসুস্থতার কথা বলে সভা বাতিল করলেন সু চি

  20-03-2018 03:43PM


পিএনএস ডেস্ক: আসিয়ানে বিশেষ সম্মলেনে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত মায়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি’র একটি সভায় ভাষণ দেয়ার কথা থাকলে অসুস্থতার কথা বলে সেটি বাতিল করে দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার সিডনির লওই ইনস্টিটিউটে এক সভায় সু চির ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল। যদিও এর কয়েক ঘণ্টা আগেই অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেন।

ওই বৈঠকে মানবাধিকারের বিষয়টি তোলার কথা ছিল টার্নবুলের।

অস্ট্রেলিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে আন্তর্জাতিক রাজনীতি, কৌশল ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো গবেষণাকারী এই প্রতিষ্ঠান গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, অসুস্থতাবোধ করায় সু চি তার কর্মসূচি বাতিল করেছেন। ওই সভায় বক্তব্য দেওয়ার পর উপস্থিত শ্রোতা-দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা ছিল তার।

পরে মায়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ এইচত গতকাল বলেন, আকাশপথে দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি এবং শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করায় সু চি ওই ভাষণ বাতিল করেছেন।

এই মুখপাত্র আরো বলেন, তবে স্টেট কাউন্সিলর বিকেলের দিকে কিছুটা সুস্থ অনুভব করেন এবং অস্ট্রেলিয়ায় মায়ানমারের নাগরিক সমাজের সঙ্গে সময় কাটান।

আসিয়ানের (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট) বিশেষ সম্মেলনে যোগ দিতে গত শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ায় গেছেন সু চি। গতকাল স্থানীয় সময় সকালে তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টার্নবুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

সু চির অস্ট্রেলিয়া সফর সামনে রেখে সে দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। এমনকি মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা মেলবোর্নের কয়েকজন আইনজীবী তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলাও দায়ের করেছেন। তবে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, তিনি ওই মামলাকে এগিয়ে নিতে দেবেন না, কারণ সু চির কূটনৈতিক ছাড় রয়েছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে অস্বাভাবিক নির্লিপ্ততা ও সামরিক বাহিনীর পক্ষে সাফাই গাওয়া নিয়ে সারা বিশ্বে চরম সমালোচনার মুখে আছেন সু চি। তার দেশের সামরিক বাহিনীর রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানো এবং সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার দেশ ত্যাগে বাধ্য হওয়াকে ‘জাতি নিধন' বলে বরাবরই উল্লেখ করছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দশ রাষ্ট্রের জোট আসিয়ান। এর মধ্যে আছে ব্রুনেই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপাইন্স, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। অস্ট্রেলিয়া এই জোটের ডায়লগ পার্টনার।

এই জোটের বৈশিষ্ট্য হলো, তারা এক সদস্য রাষ্ট্র অন্য সদস্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায় না। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা চুপ থাকতে পারেনি। বিশেষ করে মালয়েশিয়া বিষয়টি নিয়ে বরাবরই উচ্চকণ্ঠ ছিল। তারা মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আসিয়ান নেতৃত্বাধীন স্বাধীন তদন্তের আহ্বানও জানিয়েছে।

তবে, শনিবারের আলোচনায় মালয়েশিয়ার নেতা নাজিব রাজাক সু চি'র ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এটি ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গিবাদী দলগুলোকে উস্কে দিতে পারে।

এদিকে, এই সম্মেলনকে ঘিরে রোহিঙ্গা ইস্যুসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চলমান নানা সংকটের বিরুদ্ধে হাজারো মানুষ প্রতিবাদ করেছেন অস্ট্রেলিয়ায়। তারা সু চি'র প্রতিকৃতিতে হিটলারের গোঁফ লাগিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন