অ্যামিনেস্টির অভিযোগ আরসার প্রত্যাখ্যান

  28-05-2018 08:20AM



পিএনএস ডেস্ক: রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর হিন্দু সম্প্রদায়ের ৯৯ জনকে হত্যার অভিযোগ নাকচ করেছে আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি-আরসা।

সংগঠনটি বলছে, তাদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের হত্যার অভিযোগ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন সঠিক নয়। সামাজিকমাধ্যম টুইটারে আরসার অ্যাকাউন্টে সংগঠনটির নেতা আতাউল্লাহ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।

এতে বলা হয়, ‘অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে উল্লিখিত সব অযৌক্তিক ও গুরুতর অপরাধের অভিযোগ আমরা স্পষ্টভাবে অস্বীকার করছি।

সম্প্রতি প্রকাশিক এক প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি জানিয়েছিল, রোহিঙ্গাদের হাতে মিয়ানমারের হিন্দুরা প্রাণ হারিয়েছেন।

সংস্থাটির ‘ক্রাইসিস রেসপন্স ডিরেক্টর’ তিরানা হাসান জানিয়েছিলেন, তারা তাদের প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথ্যের সত্যতার বিষয়ে নিঃসন্দেহ।

তবে অ্যামনেস্টির দাবিকে নাকচ করে আরসার বিবৃতিতে বলা হয়েছে- ‘একই ভাষা ও সংস্কৃতির’ হিন্দু সম্প্রদায়ের কাউকে হত্যা বা জখম করা যে কোনো রোহিঙ্গার জন্য অযৌক্তিক।

উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আরসার বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ শুরু হলে ব্যাপক হত্যা-নির্যাতনের মুখে পড়ে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা। ওই সময় থেকে প্রাণ বাঁচাতে অন্তত সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

তখন জাতিসংঘ ছাড়াও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও প্রভাবশালী দেশ মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও জাতিগত নিধন চালানোর অভিযোগ করে।

এর মধ্যে সেপ্টেম্বরে রাখাইন রাজ্যের দুটি গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের গণকবর আবিষ্কার করার দাবি জানিয়েছিল মিয়ানমার। এর জন্য তারা তখন আরসাকে দায়ী করেছিল। তখন আরসার পক্ষ থেকে ওই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়।

এর পর সম্প্রতি হঠাৎ করেই লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি এক প্রতিবেদনে দাবি করে, অন্তত ৯৯ জন হিন্দু রোহিঙ্গাকে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

সংস্থাটির দাবি, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ও রাখাইনে থাকা রোহিঙ্গারা তাদের নিশ্চিত করেছে। উত্তরাঞ্চলীয় মংডু শহরের আশপাশের গ্রামে হিন্দু জনগোষ্ঠীর মানুষকে হত্যা করেছে আরসা।

তবে অ্যামনেস্টির এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর রোহিঙ্গা নিপীড়নবিরোধী অ্যাক্টিভিস্টরা প্রশ্ন তোলেন, রাখাইনে জাতিসংঘসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যকে প্রবেশের ওপর মিয়ানমার বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে। এর মধ্যে অ্যামনেস্টি কিভাবে রাখাইনে গিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলল?

অনেকেই অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনকে মিয়ানমার সেনাবান্ধব ও তাদের স্বার্থরক্ষায় সাজানো সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে প্রণয়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে মিয়ানমার সেনা ও চরমপন্থী বৌদ্ধরা সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও জাতিগত নিধনযজ্ঞ শুরু করলে মুসলমানদের পাশাপাশি বেশ কিছু রোহিঙ্গা হিন্দুও বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

ওই সময় দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমকে তারা মিয়ানমার সেনা ও বৌদ্ধদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিবরণ দেন। কিন্তু কিছুদিন পরে রহস্যজনকভাবে আশ্রয় নেয়া হিন্দুরা প্রায় একই সুরে ভোল পাল্টে ফেলে। তারা আরসাকে দোষারোপ করতে শুরু করে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন