আজ সবার নজর সিঙ্গাপুরে

  12-06-2018 09:03AM


পিএনএস ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পিয়ংইয়ং ‘নতুন সম্পর্ক স্থাপন’ করতে পারে, এমন একটি সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের ঐতিহাসিক বৈঠকের এক দিন আগে এমন মনোভাব প্রকাশ করে উত্তর কোরিয়া। এই মন্তব্যে কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি উত্তর কোরিয়ার বিদ্বেষমূলক মনোভাব পোষণ করার পর সুর পাল্টানোর লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সাধারণত তাদের নেতার তৎপরতার খবর প্রকৃত সময়ে প্রকাশ করে না এবং এবারের বৈঠক সম্পর্কেও সরাসরি কিছু বলেনি। কিন্তু রোদং সিনমুন সংবাদপত্রের সম্পাদকীয়তে ট্রাম্পের সাথে বৈঠক করতে কিম সিঙ্গাপুরে গিয়েছেন এটি নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, ‘নতুন যুগের দাবি মেটাতে আমরা একটি নতুন সম্পর্ক গড়ে তুলব।’ এতে আরো বলা হয়, ‘কোরীয় উপদ্বীপে একটি স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণ শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলতে এবং কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ইসু্যুসহ যেসব সমস্যা সাধারণ উদ্বেগের বিষয় সেগুলোর সমাধানে খোলাখুলি গভীর মতামত বিনিময় করা যেতে পারে। পত্রিকাটি আরো জানায়, ‘যদি অতীতে আমাদের সাথে কোনো দেশের শত্রুতামূলক সম্পর্কও থেকে থাকে, তারা যদি আমাদের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়, তাহলে সংলাপের ভিত্তিতে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইব আমরা, এটিই আমাদের মনোভাব।’

পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ট্রাম্প-কিম বৈঠকের মূল ইস্যু হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র চায়, উত্তর কোরিয়া তার পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করুক। কিন্তু উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের এই চাপ প্রতিরোধ করবে বলেই ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে; কিন্তু বিনিময়ে তারা কী চাইতে পারে তা পরিষ্কার নয়। স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় উভয় দেশের নেতাই সিঙ্গাপুরের পৌঁছেন। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাদের বহু প্রত্যাশিত এই বৈঠকের ব্যাপারে তার মধ্যে ‘শুভ অনুভূতি’ বিরাজ করছে। সোমবার সকালে এক টুইটে তিনি জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুরের ‘আবহে উত্তেজনা বিরাজ করছে’।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের আশা, এই শীর্ষ বৈঠকের মধ্য দিয়ে একটি প্রক্রিয়া শুরু হবে যা শেষ পর্যন্ত কিমের পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগে গিয়ে ঠেকবে। ট্রাম্প ও কিম সিঙ্গাপুরে পৃথক দু’টি হোটেলে অবস্থান করছেন, তবে হোটেল দু’টি পরস্পর থেকে খুব বেশি দূরে নয়। মঙ্গলবার তারা সিঙ্গাপুরের সানতোসা দ্বীপের আরেকটি হোটেলে বৈঠকে মিলিত হবেন। পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয় এই দ্বীপটি সিঙ্গাপুরের মূল ভূখণ্ড থেকে কয়েক শ’ মিটার দূরে।

সম্মেলন প্রচারে গণমাধ্যমগুলোর তীব্র প্রতিযোগিতা
যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যকার আলোচিত শীর্ষ সম্মেলনকে সামনে রেখে দক্ষিণ কোরিয়ার ক্যাবল টিভি ব্রডকাস্টারদের মধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা গেছে। সম্মেলনের একদিন পর দেশটিতে আঞ্চলিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই নির্বাচনের চেয়ে দুই নেতার সম্মেলনের ওপর অনেক গুরুত্ব দিতে দেখা যাচ্ছে দেশটির প্রচার মাধ্যমগুলোকে। সম্মেলনের একদিন আগেই সিঙ্গাপুরে দেখা গেছে দেশটির গণমাধ্যম কেবিএস, এমবিএস ও এসবিএসসহ অন্য সম্প্রচার কর্মীদের।

কেবিএস এ উপলক্ষে ৪০ জন রিপোর্টারের একটি বিশেষ দল সিঙ্গাপুরে পাঠিয়েছে। দলটি দ্য কাপেলা হোটেলের ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া সেন্টার, সিঙ্গাপুরে উত্তর কোরিয়া, মার্কিন দূতাবাসসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সংবাদ সম্প্রচার করবে। কাপেলা হোটেল থেকে চার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ২১ তলা একটি ভবনের ছাদে তাদের আউটডোর স্টুডিও স্থাপন করা হয়েছে। রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত অন্য সম্প্রচার মাধ্যম এমবিএস সম্মেলনে ৫০ জন রিপোর্টারের বিশাল একটি দল পাঠিয়েছে। আর এসবিএসএর কর্মী সংখ্যা ৪০ জন।

উল্লেখ্য, আজ স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় দুই নেতা সেখানে বৈঠকে মিলিত হবেন। এটিই হবে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে প্রথম বৈঠক। সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত এ শীর্ষ সম্মেলনকে সামনে রেখে রোববার সিঙ্গাপুর পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। সেন্তোসা আইল্যান্ডের দ্য কাপেলা হোটেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং-উনের বৈঠক হবে। দীর্ঘদিনের বৈরী দুই দেশের মধ্যে বহুল প্রত্যাশিত এ শীর্ষ সম্মেলনকে ঘিরে সিঙ্গাপুর এখন সারাবিশ্বের প্রচারমাধ্যম ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মনোযোগের কেন্দ্রে। সম্মেলনের সংবাদ ও ছবি সংগ্রহে এরই মধ্যে সেখানে সমবেত হয়েছেন তিন হাজার সাংবাদিক। একদিনেরও বেশি সময় হাতে রেখে পৌঁছে গেছেন কোরীয় ও মার্কিন নেতারাও।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন