তুরস্কের নির্বাচনে এরদোগানের ঐতিহাসিক জয়

  25-06-2018 02:37AM

পিএনএস ডেস্ক: তুরস্কে প্রথমবারের মতো যুগপতভাবে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোগান ও তার জোটের ঐতিহাসিক বিজয় হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদোলু নিউজ এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী- স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৫.৪২ শতাংশ ভোট গণনায় ২ কোটি ৫২ লাখ ৯১ হাজার ভোট পেয়ে নিশ্চিত বিজয়ের পথে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান।

অন্যদিকে পার্লামেন্ট নির্বাচনে এ পর্যন্ত গণনা হওয়া ৯৪.৯২ ভাগ ভোটের মধ্যে এরদোগান তথা একে পার্টির নেতৃত্বাধীন জোট পেয়েছে ৫৩ দশমিক ৮২ শতাংশ।

অপরপক্ষে নিটকতম প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন মুহারেরম তথা সিএইচপি পার্টির নেতৃত্বে ন্যাশনাল এ্যালায়েন্স। প্রেসিডেন্ট পদে তাদের প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ ৩০ দশমিক ৭ শতাংশ বা ১ কোটি ৪৬ লাখ। পার্লামেন্ট নির্বাচনে ন্যাশনাল এ্যালায়েন্স পেয়েছে ৩৪.০৭ শতাংশ ভোট।

নির্বাচিত হলে যে ক্ষমতা পাবেন এরদোগান: প্রেসিডেন্ট পদে এবার এরদোগানের সময় একটু অন্যরকম। ভোটের মাধ্যমে অনুমোদিত প্রেসিডেন্টের জন্য বেশ কিছু নতুন ক্ষমতা বলবৎ হবে। পুনর্বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে যে ক্ষমতা পাবেন এরদোগান-

১. মন্ত্রী ও ভাইস প্রেসিডেন্টসহ সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সরাসরি নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা

২. দেশের আইনি ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা

৩. জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষমতা এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর পদ বিলুপ্ত করতে পারবেন তিনি।

নির্বাচনে ছয়জন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী রয়েছেন। কেউ যদি ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পান, তিনিই প্রেসিডেন্ট হবেন। তবে কেউই যদি ৫০ শতাংশ ভোট নিশ্চিত করতে না পারেন, ৮ জুলাই দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

এবারের তুরস্কের নির্বাচন মূলত দুটি জোটে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একটি পিপলস অ্যালায়েন্স। এখানে আছে এরদোগানের একে পার্টি, ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি ও গ্রেট ইউনিটি পার্টি। অপরটি ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স।

এছাড়া চারটি দল আছে- শক্তিশালী রিপাবলিকান পিপলস পার্টি, ফ্যালিসিটি পার্টি, আই পার্টি ও ডেমোক্রেটিক পার্টি। নির্বাচনে একটি বড় সুবিধা হল, এরদোগান পিপলস অ্যালায়েন্সের একক প্রার্থী।

তুরস্কে নির্বাচনে রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান পুনরায় প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার পর তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে এক বিজয় ভাষণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি এই বিজয় ভাষণ দিবেন যা তা সমর্থকেরা শোনার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন একে পার্টির মূখপাত্র মাহির উনাল।

এদিকে তুরস্কে নির্বাচনে রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান পুনরায় প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার পর ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম তাকে অভিনন্দন জানিয়েছে হাঙ্গেরী।

এছাড়াও আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এরদোগানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

এক বার্তায় রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগানকে তিনি এই অভিনন্দন জানান। নির্বাচনি ফলাফলকে তুরস্কের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক অধ্যায় বলেও উল্লেখ করেন।

এছাড়াও ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানরা অভিনন্দন জানানো অব্যাহত রেখেছেন।

এরদোগান প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তুরস্কের সংবিধানে তিনি যে পরিবর্তন এনেছেন তাতে প্রেসিডেন্টকে নতুন এবং ব্যাপক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

এরদোয়ান ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট হবার আগে ১১ বছর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

তুরস্কে ২০১৬ সালে তার বিরুদ্ধে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে জরুরি অবস্থা চলছে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন