কখনো ভুলবেন না, তাদের ডলার থাকলে আমাদের সাথে আল্লাহ ও জনগণ আছে: এরদোগান

  11-08-2018 10:47AM


পিএনএস ডেস্ক: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের নীরবতার মধ্য দিয়ে একটি সপ্তাহ পার হলো যেখানে তুরস্কের মার্কেটে রক্তগঙ্গার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এরদোগান এ বিষয়ে তার জাতির উদ্দেশ্যে কিছু বলা ছাড়াই বিরলভাবে দিনগুলো পার হয়ে যাচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি এই নীরবতা ভেঙ্গেছেন।

৬৪ বছর বয়স্ক এই নেতা সপ্তাহ খানেক নীরব থাকার পর তার জন্ম স্থান রিজ নামক অঞ্চলের একটি মসজিদের বাহিরে তার বিশ্বাসী সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে আতঙ্কগ্রস্ত না হতে আহ্বান জানান।

‘কখনো ভুলে যাবেন না, যদি তাদের ডলার থাকে তবে আমাদের সাথে আমাদের জনগণ রয়েছে, আমাদের অধিকার রয়েছে এবং আমাদের সাথে আল্লাহ তাআলা রয়েছেন।’, রাষ্ট্রয়াত্ব গণমাধ্যম এরদোগানকে উদ্বৃতি দিয়ে এমনটি জানিয়েছে। তুরস্কের মুদ্রা লিরার মান খুবই নিম্নগামী রয়েছে।

আঙ্কারা যুক্তরাষ্ট্রের যাজক এন্ড্রু ব্রানসনকে মুক্তি দিতে অস্বীকার করার পরে ওয়াশিংটন দেশটির দুই মন্ত্রীর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরে থেকে তুরস্কের সম্পদ আবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সকল চেষ্টা দেয়ালে গিয়ে ঠেকেছে।

দেশটির সবচাইতে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসাবে এরদোগানের মন্তব্যের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে কিন্তু শনিবার থেকে তিনি জনসম্মুখে আসেননি। যদিও তিনি এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কিন্তু তা এখনো জনসাধারণের নিকট পৌঁছেনি।

শুক্রবার দেশটির বাইব্রুটের পূর্ব অঞ্চলে যেখান থেকে তিনি জুন মাসের জাতীয় নির্বাচনে অন্তত ৬০,০০০ হাজার ভোট পেয়েছিলেন যা তাকে পুনরায় ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করেছে। সে স্থানে তুরস্কের অর্থনীতি সম্পর্কে কথা বলেন যা তুর্কি এবং এর সমমনা বিনিয়োগকারীদের কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিয়েছে।

‘এই ত্রুতিহীন বিশ্বে, বিশ্ববাজার ব্যবস্থা বিশ্বাসযোগ্য সংস্কারের কথা শুনতে চায়।’ ক্রেডিট এগরিকোলের একজন পরিসংখ্যানবিধ মঙ্গলবার প্যারিসে এমনটি জানান। ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাধার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি এবং এরকম ঘোষণা দেয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। বিশ্বাসযোগ্যতা একেবারেই ধ্বংস হয়ে গেছে যে আপনি বাজারকে আশ্বস্ত করতে পারেন।’-তিনি এমনটি জানান।

এটা এরদোগানের জনপ্রিয়তার জন্য নয় যিনি ২০০৩ সাল থেকে দেশটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। কিন্তু এটি হচ্ছে লিরার মুক্ত পতনের করণে এবং সেখানে এরকম একটি মনোভাব তৈরী হয়েছে যে কিছু একটা করা দরকার।

নিমজ্জিত লিরা
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর বিনিয়োগকারীরা এই ভয়ে আছেন যে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির প্রতি আরো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে যা তুরস্কের বৈদেশিক বাণিজ্যের অসমতা এবং মুদ্রাস্ফীতি বয়ে আনবে এবং এ কারণে তুর্কি লিরার মান ১৬ শতাংশ পর্যন্ত নিম্নগামী হয়েছে।

শুক্রবার ডলারের মান ১৩.৫ শতাংশের মত উঠনামা করে যা তুর্কি লিরার মানকে স্মরণকালের সবচেয়ে নিম্মগামী করে দেয় যা ছিল ৬.৩০০৫ শতাংশ। সে সময় ইস্তাম্বুলে ডলারের চাইতেও ৭ শতাংশ কম হারে ব্যবসায়ীগণ বাধ্য হন তুরস্কের মুদ্রায় ব্যবসা করতে।

বাজারকে চাঙ্গা করতে হলে এই সব দুর্বলতাগুলোকে অবশ্যই সংশোধন করতে হবে।

যাজক এন্ড্রু ব্রানসনের ভাগ্য সম্পর্কে এরদোগান যা বলেছিলেন তাতে দেশটির সাথে ভবিষৎ সম্পর্কের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খুবই গুরুত্বপূ্র্ণ। এই দুই দেশের মিত্রতা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম যা দুই দেশের মধ্যকার সিরিয়া ইস্যু নিয়ে ভিন্নতা এবং ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে বৈরিতার উপর ভিত্তি করে পুনরায় বিন্যাসের দাবী রাখে। সূত্রঃ ব্লুমবার্গ.কম

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন