‘সত্যিই কি ভারতের নাগরিকরা স্বাধীন?’

  15-08-2018 11:21AM


পিএনএস ডেস্ক: ‘একটা জাতিকে পছন্দ করি না বলে তাড়িয়ে উৎখাত করা যায় নাকি’ বলে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন ভারতের বাংলা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বুধবার সন্ধ্যায় রাজ্যটির রাজধানী কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রশ্নের অবতাড়না করেন।

তিনি বলেন, ‘আগামী বছর বিজেপিকে উৎখাত করে প্রকৃত স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপিত হবে।’ মধ্যরাতের স্বাধীনতা উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানের সূচনা করে মঙ্গলবার বেহালার ম্যান্টনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, ‘আমাদের শপথ নিতে হবে, ২০১৯-এ বিজেপিকে উৎখাত করে ভারতকে প্রকৃত অর্থে স্বাধীন আমরা করবই।’ আগামী বছর ১৪ অগস্ট এই বেহালায় এসেই সেই স্বাধীনতা উদ্‌যাপন করবেন বলেও অঙ্গীকার করেন তিনি। বলেন, ‘তোমাদের (বিজেপি) চার বছর দেখছি। আর ছ’মাস দেখব। তার পর তোমরা দেখবে, মানুষ, কী বলে।’

বিজেপি শাসিত ভারতে স্বাধীনতা যে ‘বিপন্ন’, মমতা এ দিনের বক্তৃতায় সেটাই বুঝিয়েছেন। এ জন্য হাতিয়ার করেছেন অসমের নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)কে। তার প্রশ্ন, ‘সত্যিই কি ভারতের নাগরিকরা স্বাধীন? কারণ, স্বাধীনতার ৭২ বছর পর এখন এক জনকে প্রমাণ দিতে হবে, তিনি দেশের নাগরিক কি না।’ তার অভিযোগ, অসমে এনআরসি-তে ২৫ লক্ষ বাঙালি হিন্দু, ১৩ লক্ষ বাঙালি মুসলিমকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

অসমের ১৪টি সংগঠন নিয়ে গড়া ইউনাইটেড বেঙ্গল ফ্রন্টের ২২ জন প্রতিনিধি এ দিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তাদের অভিযোগ, ১৯৬৪, ’৬৫, ’৬৬, সালের তথ্য থাকার পরেও বিজেপি নাগরিকদের নাম কেটে দিচ্ছে। বাদ যাওয়াদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক বঙ্গভাষী ছাড়াও কিছু অসমিয়া, নেপালি সহ ২ শতাংশ বিহারের বাসিন্দার নামও রয়েছে।

বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একটা জাতিকে পছন্দ করি না বলে তাড়িয়ে উৎখাত করা যায় নাকি? ইউএনও কনভেনশন বলছে, সমস্যায় পড়ে অন্য দেশ বা রাজ্য থেকে কেউ এলে তাকে আশ্রয় দিতে হয়। ১২০০ লোককে ডিটেনশন ক্যাম্পে ধরে রাখা হয়েছে। ভারতীয় নাগরিকদের অসম্মান করা হচ্ছে। পরাধীনের মতো বাস করছে। প্রতিবাদ করেছি বলে আমি নাকি উগ্রপন্থী! আমার নামে মামলা করেছে। প্রতিবাদ করলেই ইডি, ইনকাম ট্যাক্স পাঠাচ্ছে।’ তার দাবি, ‘বিজেপি-র মধ্যেও নেতারা কথা বলতে পারেন না। বাইরে একমাত্র আমি প্রতিবাদ করি। বিহার, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ আক্রান্ত হলেও একই ভাষায় কথা বলব। মরতে রাজি। কিন্তু বিজেপি-র কাছে আত্মসমর্পণে রাজি নই। কত বন্দুক, জেল, ক্ষমতা আছে, নিয়ে এসো দেখি।’

এনআরসি নিয়ে তৃণমূলকে অমিত শাহ আক্রমণ করেছিলেন মেয়ো রোডের সভায়। এ দিন মমতার মন্তব্য, ‘ওর নিজের, বাবার শংসাপত্র রয়েছে তো? মায়ের রয়েছে? গাঁধীজির রয়েছে? এত বড় বড় মানুষের শংসাপত্র আছে? থাকা সম্ভব? আমার কাছে তো বাবার জন্মের শংসাপত্র নেই। বিবেকানন্দ, নজরুল, বিদ্যাসাগরের মায়ের জন্মদিন কবে? ভাগ্য করে পশ্চিমবঙ্গে জন্মেছি। না হলে আমাকেই অনুপ্রবেশকারী বলত।’ শাহের এক জাতি, এক ভোটের দাবি প্রসঙ্গে মমতার মন্তব্য, ‘সুপার গডের মতো কাজ করছে।’

তিনি বলেন, বিজেপি সমালোচনা করছে ২০০৫ সালে মমতা সংসদে অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। সে প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘২০০৫ সালে নদিয়ার উদ্বাস্তুদের নিয়ে আন্দোলন করেছিলাম। কারণ, তাদের নাম ভোটার তালিকায় থাকলেও ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। আমার বক্তব্যের অপব্যাখ্যা হয়েছে।’ সূত্র: আনন্দবাজার

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন