বাংলাদেশের সঙ্গে মিল থাকায় পশ্চিমবঙ্গকে 'বাংলা' নাম অনুমোদনে আপত্তি

  19-10-2018 09:09PM

পিএনএস ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের নাম বদল করার যে স্বপ্ন দীর্ঘদিন দিন ধরে দেখে আসছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, তার সেই ইচ্ছায় আপত্তি জানাল ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মমতার ইচ্ছা ছিল রাজ্যের নাম বদলে রাখা হোক ‘বাংলা’, কিন্তু সেই নামের সঙ্গে বাংলাদেশের মিল থাকায় আন্তর্জাতিক মঞ্চে ‘বাংলা’ ও ‘বাংলাদেশ’ নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে। নামের সাদৃশ্য থাকার কারণে দুই বাংলাকে পৃথক করার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এই কারণেই রাজ্যের নাম বদল করে ‘বাংলা’ করার যে প্রস্তাব মমতার রেখেছেন তাতে সবুজ সংকেত নাও মিলতে পারে।

সূত্রে খবর, সম্প্রতি ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে কেন্দ্রীয় পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পাঠানো চিঠিতে এই উদ্বেগের বিষয়টি জানানো হয়। যেহেতু ভারতের সাথে বাংলাদেশের একটি সুসম্পর্ক বিরাজ করছে সেই পরিপ্রেক্ষিতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবনা নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে যেন সব দিক ভেবে পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে তাতে মনে করা হচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে অনুমোদন না দেওয়া হলে রাজ্য সরকারকে বর্তমান ‘পশ্চিমবঙ্গ’ নামটিই রেখে দিতে হবে, না হয় অন্য নাম খুঁজতে হবে যাতে বাংলাদেশের সঙ্গে নামের ক্ষেত্রে কোন সাদৃশ্য না থাকে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তার অভিমত ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে আমরা বার্তা পেলেই সংশোধনী বিল আনতে মন্ত্রিসভার তরফে একটি খসড়া নোট তৈরি করা হবে। এরপর সংবিধান সংশোধন বিলটি সংসদে পেশ করা হবে এবং সেখানে পাশের পর রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে।’ রাষ্ট্রপতির অনুমোদন মিললে তবেই পশ্চিমবঙ্গের নাম হবে ‘বাংলা’।

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম বদল নিয়ে গত জুলাই মাসে রাজ্যটির বিধানসভায় সর্বসম্মত ভাবে একটি প্রস্তাব পাস হয়। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানান ‘বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি-তিনটি ভাষাতেই নাম হবে ‘বাংলা’। এরপর রাজ্য সরকারের তরফে সেই সর্বসম্মত প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

রাজ্যের নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ইংরেজীতে ‘ওয়েষ্টবেঙ্গল’ হওয়ায় এর প্রথম অক্ষর ডব্লিউ থাকায়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে কোনও গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক বা আলোচনাচক্রে রাজ্যের প্রতিনিধির ডাক আসে একেবারে শেষে। ফলে জাতীয় স্তরের সেই আলোচনায় রাজ্যটির প্রতিনিধিরা কার্যত বিশেষ কিছুই বলার সুযোগ পান না, কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সভাঘর সেসময় প্রায় ফাঁকা হয়ে যায় নয়তো অনেকেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন।

অন্যদিকে, বাংলার প্রতিনিধিদের দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। ধৈর্য্য হারিয়ে যায় রাজ্যের প্রতিনিধিদেরও। নামের সমস্যার কারণেই গত ২০১৬ সালের মাঝামাঝি দিল্লিতে আন্তরাজ্য কাউন্সিল বৈঠকেও একেবারে শেষদিকে বক্তব্য রাখতে ওঠেন মমতা। সেই থেকেই রাজ্যের নাম বদলের জন্য উদ্যোগ নেওয়া শুরু করে তৃণমূলের সরকার।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন