ভোটার ধরতে করছাড় মন্ত্র মোদির

  16-01-2019 09:23AM


পিএনএস ডেস্ক: ভারতের লোকসভা নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। মাস চারেক পরেই ভোট। ইতিমধ্যে ভোট ব্যাংক দখলে মাঠে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের বশে আনতে আদাজল খেয়ে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জনগণের আস্থা অর্জনে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিুবিত্ত- সব শ্রেণীকে খুশি করার চেষ্টায় মরিয়া তিনি।

গত সপ্তাহে উচ্চবর্ণের লোকদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা পাস করিয়েছেন পার্লামেন্টে। এবার মধ্যবিত্তের মন জয়ে করছাড় মন্ত্রে এগোচ্ছেন মোদি।

ক্ষমতাসীন বিজেপি দলীয় সূত্রের বরাতে জানা গেছে, লোকসভা নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী বাজেটে মধ্যবিত্তদের আয়কর ছাড় বাড়িয়ে দ্বিগুণ করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়।

বর্তমানে বছরে আড়াই লাখ রুপি আয় করলে কোনো আয়কর দিতে হয় না। ওই হার বাড়িয়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ পাঁচ লাখ রুপি করা হতে পারে। খবর এনডিটিভি ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী বাজেট ঘোষণা হতে পারে। ২০১৮ সালে বাজেট ঘোষণায় অর্থমন্ত্রী জেটলি আয়কর হারে কোনো পরিবর্তন আনেননি। তিনি বলেছিলেন, ‘গত তিন বছরে সরকার আয়করে বহু ছাড় দিয়েছে। করে আর কোনো ছাড়ের প্রশ্নই আসে না।’

কিন্তু সেই সুর নরম করতে যাচ্ছে বিজেপি সরকার। নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন নীতিতে হাঁটছেন তারা। গত সপ্তাহে উচ্চবর্ণের লোকদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা পদ্ধতি পাস করিয়েছে বিজেপি সরকার। এ কোটা বাস্তবায়নের জন্য এখন সংবিধান পরিবর্তনের পথে হাঁটছে দলটি।

এবার মধ্যবিত্তদের জন্য আয়কর সীমা বাড়াচ্ছে বিজেপি। সূত্র বলছে, পাঁচ লাখ রুপির বেশি বার্ষিক আয়ের ওপর করারোপের চিন্তা করছেন মোদি সরকার। অর্থাৎ পাঁচ লাখ রুপির নিচে আয় হলে তাকে কর দিতে হবে না। বর্তমানে আড়াই লাখ রুপি পর্যন্ত বার্ষিক আয়ে কর দিতে হয় না। আড়াই লাখ থেকে পাঁচ লাখ রুপি আয়ে ৫ শতাংশ কর দিতে হবে। পাঁচ থেকে ১০ লাখ রুপি আয়ের ক্ষেত্রে কর দিতে হয় ২০ শতাংশ। ১০ লাখ রুপির উপরে আয়ের ক্ষেত্রে কর লাগে ৩০ শতাংশ। মধ্যবিত্তদের স্বস্তি দিতে আরও বেশকিছু রদবদল আনা হতে পারে চিকিৎসা ও পরিবহন খরচের ক্ষেত্রেও।

এর আগে বছরে পাঁচ লাখ রুপি রোজগার ব্যক্তিদের ১৫ হাজার রুপি পর্যন্ত চিকিৎসা খরচে কর এবং ১৯ হাজার ২০০ রুপি পরিবহন ভাতা উঠিয়ে একেবারে ২০ হাজার টাকা কর দেয়ার বন্দোবস্ত করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। এবার ওই দুই খাতের করও উঠিয়ে দিতে পারে মোদি সরকার। তবে কর্পোরেট ট্যাক্সের ক্ষেত্রে কোনো রদবদলের সম্ভাবনা নেই। বর্তমানে ১ শতাংশ কর্পোরেট ট্যাক্স লাগে।

যদিও সরকারি সূত্রের খবর, নির্বাচনের আগে আয়করের ছাড়ে বেশি রদবদল হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। নির্বাচনী ফলাফলেও তার প্রভাব পড়তে পারে। ফলে এ নিয়ে ধীরে পা ফেলতে চায় মোদি সরকার। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ডিরেক্ট ট্যাক্স কোড রিপোর্ট পেশ করা হবে। তাতে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে করের আওতায় ঢোকানোর পাশাপাশি ব্যবসা ক্ষেত্রে সুস্থ প্রতিযোগিতা বাড়ানোর জন্য কর্পোরেট করের হার কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নিতে চায় সরকার। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে শোচনীয় ফলাফল, কৃষক ও দলিত বিক্ষোভ, নোটবন্দি নীতির বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগসহ একাধিক বিষয়ে ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি সরকার। লোকসভা নির্বাচনের আগে এসব অভিযোগ ঠেলে ঘুরে দাঁড়াতে চায় তারা।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন