আবারও অচলাবস্থার মুখে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকার

  12-02-2019 09:40AM


পিএনএস ডেস্ক: সীমান্ত নিরাপত্তা বিষয়ক চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতাদের মধ্যে চলমান আলোচনা হোঁচট খেয়েছে। এ অবস্থায় দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার আরেকবার আংশিক অচলাবস্থায় পড়তে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অচলাবস্থা এড়াতে চাইলে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান আইন প্রণেতাদের সোমবার (গতকাল) রাতের মধ্যে অবশ্যই একটা সমঝোতায় পৌঁছতে হবে।

মার্কিন কংগ্রেসের উভয় কক্ষের (সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) ১৭ আইন প্রণেতার মধ্যে সীমান্ত নিরাপত্তাবিষয়ক একটি চুক্তি নিয়ে দর-কষাকষি চলছে। এক পক্ষে আছেন ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের আইন প্রণেতারা; অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট আইন প্রণেতারা। উভয় পক্ষ এমন একটা চুক্তি করতে চাইছে, যেন সেটা কংগ্রেসে অনুমোদন পায়।

বিবিসির খবরে বলা হয়, কতজন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হবে এবং মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণে ট্রাম্পকে কত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে—তা নিয়েই মূলত আলোচনা আটকে আছে। ডেমোক্র্যাটরা চেষ্টা করছেন, মার্কিন নিরাপত্তাকর্মীরা যাতে খুব বেশি অবৈধ অভিবাসীকে আটক করতে না পারে। তাঁরা সংখ্যাটা সাড়ে ১৬ হাজারের মধ্যে রাখতে চান। ডেমোক্র্যাটরা আশা করছেন, সাড়ে ১৬ হাজারের সীমা বেঁধে দিলে নিরাপত্তাকর্মীরা শুধু অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত অভিবাসীদের আটকের ক্ষেত্রেই মনোযোগী হবে। ভিসা শেষ হয়ে যাওয়া অভিবাসীদের ধরার চেষ্টা করবে না।

এ ছাড়া মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের জন্য ট্রাম্প যে ‘জেদ’ ধরে আছেন, তার জন্য ২০০ কোটি ডলারের বেশি দিতে চান না ডেমোক্র্যাটরা। কিন্তু ট্রাম্পের দাবি ৫৭০ কোটি ডলার। গত শনিবার এক টুইটার বার্তায় ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ‘ডেমোক্র্যাট আইন প্রণেতারা অযৌক্তিক আচরণ করছেন।’

ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে চলমান আলোচনায় রিপাবলিকানদের হয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সিনেটর রিচার্ড শেলবি। ফক্স নিউজকে তিনি বলেন, ‘সমঝোতার ক্ষেত্রে ৫০-৫০ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর অচলাবস্থার ভূত সব সময় থাকবেই।’ ডেমোক্র্যাট আইন প্রণেতা জন টেস্টার বলেছেন, তাঁরা এখনো সোমবার রাতের মধ্যে একটা চুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী।

সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের অর্থ নিয়ে সমঝোতা না হওয়ায় গত মাসেই ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ অচলাবস্থা তৈরি হয় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারে। কাজকর্ম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায় সরকারের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর টানা ৩৫ দিন বন্ধ থাকে। অনেক দপ্তরের কর্মীদের কাজ করতে হয় বেতন ছাড়াই। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ক্ষতি হয় এক হাজার ১০০ কোটি ডলার।

২৫ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তিন সপ্তাহ সরকার পরিচালনার জন্য একটি বিলে অনুমোদন দেন। এর মধ্যে সীমান্ত সুরক্ষা নিয়ে একটা সমঝোতায় পৌঁছতে উভয় দলের আইন প্রণেতাদের নির্দেশ দেন তিনি। তিন সপ্তাহের ওই বরাদ্দ আগামী শুক্রবার শেষ হয়ে যাবে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়, সোমবার মধ্যরাতের মধ্যে সমঝোতা হলে শুক্রবারের আগে সরকার পরিচালনার জন্য আরেকটি অন্তর্বর্তীকালীন বরাদ্দ পার্লামেন্টে পাস করানো যাবে। আর না হলে আবারও অচলাবস্থার মুখে পড়বে কেন্দ্রীয় সরকার। সূত্র : বিবিসি।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন