`রোহিঙ্গা মুসলিমদের যৌন নির্যাতন ও শিশুদের আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছে'

  15-02-2019 07:34AM



পিএনএস ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিম যুবকদের হত্যা এবং নারী ও কন্যাদের ওপর ভয়াবহ যৌন নির্যাতন চালানো হয়। এছাড়া, রোহিঙ্গা শিশুদের আগুনে ছুঁড়ে ফেলে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত টিমের একজন সদস্য। সম্প্রতি রাধিকা কুমারাস্বামী নামের জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা আনাতোলি বার্তা সংস্থাকে এইসব তথ্য দিয়েছেন।

জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে প্রথমে রোহিঙ্গা যুবকদের হত্যা করা হয় এবং এরপর রোহিঙ্গা নারী ও কন্যাদের ওপর ভয়াবহ যৌন নির্যাতন চালানো হয়। বড় বড় ভবনে ও আটককেন্দ্রগুলোতে এইসব পরিকল্পিত অপরাধ চালানো হয়। রোহিঙ্গা শিশুদের ওপরও নির্যাতন চালানোর সাক্ষ্য পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান।

রোহিঙ্গা শিশুদেরকে বাবা-মা থেকে পৃথক করা হয় এবং এমনকি কখনও কখনও তাদেরকে আগুনে ছুঁড়ে ফেলা হয় বলে ওই কর্মকর্তা জানান।

জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা মিয়ানমারের ৬ জন জেনারেলকে চিহ্নিত করেছি যাদের যুদ্ধ-অপরাধ, গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সম্পর্কে অবশ্যই তদন্ত চালাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, রাখাইনে যা ঘটছে তা এক নতুন সামরিক অভিযান এবং এ নিয়ে আমরা তীব্র উদ্বেগের মধ্যে রয়েছি, কারণ এক বছর পর দেখা যাচ্ছে যে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।

রাধিকা কুমারাস্বামী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিবিরগুলোর শোচনীয় অবস্থা ও তাদের চরমপন্থী হয়ে ওঠার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, তারা বেকার ও তাদের শিক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই এবং সারা দিন তারা এক জায়গায় থাকছে; এমন পরিণতি কে চাইতে পারে?

তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে যাতে রোহিঙ্গারা স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল অবস্থায় থাকতে পারে। আর তা সম্ভব না হলে রোহিঙ্গা মুসলমানদেরকে অপেক্ষাকৃত বেশি নিরাপদ অঞ্চলে পাঠানো অনিবার্য হয়ে পড়বে।

জাতিসংঘ ২০১৮ সালের এক প্রতিবেদনেও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর ওপর গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধসহ ব্যাপক সহিংসতা ঘটার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও দেশটির উগ্র বৌদ্ধরা রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপরগণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ’সহ ভয়াবহ মানবতা বিরোধী অপরাধ চালায়। ওই দমন অভিযানে অন্তত ৬ হাজার নিরীহ মুসলমান নিহত ও অপর আট হাজারের বেশি রোহিঙ্গা আহত হন। এছাড়া, সহায়-সম্বল হারিয়ে প্রাণ ও সম্ভ্রম বাঁচাতে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেন ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান।

জাতিসংঘ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ‘জাতিগত শুদ্ধি অভিযান’ চালানোর জন্য দেশটির সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছে। এছাড়া, এই সেনাবাহিনীকে বিশ্বের সবচেয়ে নিকৃষ্ট সেনাবাহিনী হিসেবেও উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন