ক্রাইস্টচার্চে ফিরে আসছেন তাঁরা

  23-03-2019 11:23AM


পিএনএস ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে আজ শনিবার থেকে আবার সবকিছু স্বাভাবিক হচ্ছে। সেখানে নামাজ আদায় করতে পারবেন মুসল্লিরা। ১৫ মার্চ বন্দুকধারীর হামলায় ৫০ জন নিহত হওয়ার পর আজ থেকে মসজিদটি খুলে দেওয়া হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজকে সামনে রেখে আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতেই নিউজিল্যান্ড কর্তৃপক্ষ আল নুর মসজিদ নামাজের জন্য প্রস্তুত করে। আল নুর মসজিদের সামনে জুমার নামাজের আগে প্রায় ২০ মিনিট বক্তব্য দেন ইমাম গামাল ফাওদা।

নিরাপত্তা ও তদন্তের কারণে আল নুর মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল পুলিশ। আজ সেখানকার স্থানীয় মুসলমানদের নামাজের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তবে কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে একসঙ্গে ১৫ জনকে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। এটি কখন সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে, সে প্রসঙ্গে ওই মসজিদের স্বেচ্ছাসেবক সাইয়াদ হোসেন বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। কখন সবকিছু পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে, তা বলা যাচ্ছে না। মসজিদ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

১৫ মার্চ পবিত্র জুমার নামাজের সময় নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর ও লিনউড মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ৫০ জন মুসল্লি। তাঁদের মধ্যে ২৬ জনকে গতকাল দাফন করা হয়েছে। এ সহিংস ঘটনা দেশটির ৪৫ লাখ মানুষকে নাড়া দিয়েছে।

শোকাবহ সেই ঘটনার স্মরণে গতকাল আল নুর মসজিদকে ঘিরে সমবেত হয় ২০ হাজার মানুষ। এর মধ্যে পাঁচ হাজার মুসলিম। অন্যরা নানা ধর্ম–জাত–বর্ণের। দেশজুড়ে ওড়নায় মাথা ঢেকে মুসলিমদের প্রতি সংহতি জানান বিভিন্ন ধর্মের নারীরা। হতাহত ব্যক্তিদের জন্য শোক-সমবেদনা আর সম্মান জানিয়ে পালন করা হয় দুই মিনিটের নীরবতা। সবকিছু ছাপিয়ে গেছে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আহডার্নের ঘোষণায়, ‘নিউজিল্যান্ড আপনাদের সঙ্গে শোকাহত, আমরা অভিন্ন।’

আগের শুক্রবার বন্দুকধারী যখন মসজিদে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করেন, মুসল্লিরা তখন জুমার খুতবা শুনছিলেন। গতকাল সেই মসজিদে খুতবায় ইমাম গামাল ফাওদার বয়ান, ‘সন্ত্রাসী চেয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে ছিন্নভিন্ন করে দিতে। তার বদলে আমরা দেখিয়েছি নিউজিল্যান্ড কতটা অবিচ্ছেদ্য। এখানে ভালোবাসা আর সংহতির দৃষ্টান্ত পেতে পারে বিশ্ব।’

মসজিদে হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে গোটা নিউজিল্যান্ডে দুই মিনিটের নীরবতা পালন কর্মসূচি কেন্দ্রীয়ভাবে পালন করা হয় আল নুর মসজিদের কাছে হ্যাগলি পার্কে। সেখানেই হাজারো মানুষের সঙ্গে সমবেত হন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আহডার্ন। সেখানে তাঁর মাথায় ছিল কালো ওড়না। শান্তভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রিসভা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও। স্থানীয় সময় বেলা দেড়টায় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিওতে প্রচার করা হয় জুমার নামাজের আজান। এরপরই পালন করা হয় দুই মিনিটের নীরবতা।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সন্ত্রাসীর গুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেয়াল মেরামত করা হচ্ছে। পরিষ্কার করা হচ্ছে মেঝের রক্ত। আজ সেখানে আগের ঘটনার সামান্য ইঙ্গিত পাওয়া যায়। দেয়ালে নতুন রং করা হয়েছে।

নিউজিল্যান্ড ওই ভয়াবহ হামলার ঘটনা ভুলে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছে। অনেক জায়গায় মসজিদসংলগ্ন পার্কে শিশুদের ক্রিকেট দেখতে দেখা যায়।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন