ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে গতি বাড়িয়েছে ইরান!

  12-06-2019 10:08AM


পিএনএস ডেস্ক: ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে গতি সঞ্চার করেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসঙ্ঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান ইয়ুকিয়া আমানো। গত সোমবার অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় সংস্থার বের্ড অব গভর্নরসের ত্রৈমাসিক সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

ইরানের পরমাণু ইস্যু নিয়ে বাড়তে থাকা উত্তেজনায় উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন আমানো। আইএইএ এর আগে মে মাসেই তাদের সর্বশেষ ত্রৈমাসিক রিপোর্টে ইরানের ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি মেনে চলার কথা জানায়।

ওই রিপোর্টের পর থেকে ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন বাড়িয়েছে কি না এ প্রশ্নের জবাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে আমানো বলেন, ‘হ্যাঁ, উৎপাদনের হার বাড়ছে।’ তবে এ উৎপাদন কতটুকু বেড়েছে কিংবা তা পরমাণু চুক্তির সীমার মধ্যেই আছে কি না তা আমানো বলেননি।

সাম্প্রতিক সময়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে জাতিসঙ্ঘের এই আন্তর্জাতিক সংস্থা এমন খবর দিলো। ২০১৫ সালে ইরানের সাথে সম্পাদিত আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি যথেষ্ট কার্যকর ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন চুক্তি করতে ইরানের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধসহ নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছেন ট্রাম্প। কিন্তু চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করা ইউরোপীয় দেশগুলো এখনো চুক্তিটি সমর্থন করছে।

গত মে মাসের শুরু থেকে অবরোধ আরো আঁটসাঁট করেছে ওয়াশিংটন। সব দেশ এবং প্রতিষ্ঠানের ওপর ইরান থেকে তেল আমদানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ আদেশ অমান্য করলে বিশ্বব্যাপী আর্থিক ব্যবস্থা থেকে নির্বাসনের হুমকি দেয়া হয়েছে। ইরানের হুমকি মোকাবেলা করতে পারস্য ভূমধ্যসাগরে বাড়তি সেনা মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ওয়াশিংটনের এই অবরোধের জবাবে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের হুমকি দিয়েছে। ইরান জানিয়েছে, ইউরোপীয়দের মধ্যে যারা এখনো পারমাণবিক চুক্তি সমর্থন করছেন, তারা যদি তেহরানকে প্রতিশ্রুত আর্থিক সুবিধা দেয়, তবে ইউরেনিয়ামের হুমকি বাড়তে দেবে না ইরান। ইয়ুকিয়া আমানো বলেন, আগের চেয়ে ইউরেনিয়াম উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছে ইরান। তবে পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী ইরান ইউরেনিয়ামের মজুদ সীমা অর্জন করেছে কিনা, সে ব্যাপারে কিছু বলেনি আইএইএ। পারমাণবিক চুক্তির সাথে ইরানের কার্যক্রমের সামঞ্জস্য পর্যবেক্ষণ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

গত বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ইউরোপীয় দেশগুলো এ সমঝোতায় অটল থাকার ঘোষণা দেয়। তারা এ সমঝোতার আওতায় ইরানকে প্রতিশ্রুত আর্থিক সুবিধা দেয়ার কথা ঘোষণা করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ইউরোপীয়রা তাদের ওই ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

এর প্রতিবাদে ইরান সম্প্রতি পরমাণু সমঝোতারই ২৬ ও ৩৬ নম্বর ধারা মেনে এই সমঝোতার কিছু কিছু ধারার বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করে। তেহরান ইউরোপকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে জানিয়েছে, পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে ইউরোপ তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে না পারলে ইরান পরমাণু সমঝোতা আরো কিছু ধারার বাস্তবায়ন স্থগিত রাখবে।
গত সোমবার জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস ইরান সফরে যান। গত মাস থেকে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যকার উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার পর বয়োজ্যেষ্ঠ পশ্চিমা কর্মকর্তা হিসেবে ইরানে পা রাখেন তিনি। ইরাক সফর শেষে সোমবার ভোরে তেহরানে পৌঁছান তিনি। সফরে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফের সাথে সাক্ষাৎ করেন তিনি। সূত্র : রয়টার্স

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন