স্বামীর আত্মহত্যার....!

  15-07-2019 05:56PM

পিএনএস ডেস্ক : জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন জাতীয় সড়কে ছিল যানজট। সেতুর ওপরে দু'মুখ করে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল গাড়ি। সেতুর এক পাশ দিয়ে হেঁটে আসছেন এক তরুণী। তার কোলে ছিল শিশু আর হাতে ব্যাগ। হঠাৎই লোকেরা দেখতে পান, হাতের ব্যাগ সেতুতে নামিয়ে রেখে কোলের শিশুকে জাপ্টে ধরে ওই তরুণী সেতুর রেলিঙে উঠছেন। আশপাশ থেকে কয়েকজন দৌড়ে যাওয়ার আগেই সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন তিনি। ভরা বর্ষায় পানিতে থৈ-থৈ করছে তিস্তা। স্থানীয়দের দাবি, ঝাঁপ দেওয়ার পর নদীতে ওই নারীকে আর দেখা যায়নি। রবিবার বিকেলে জলপাইগুড়ি শহরের তিস্তা সেতুতে এমনটাই ঘটেছে। ওই নারীর খোঁজে নদীতে তল্লাশি চলছে।

জানা গেছে, সেতুতে রাখা ব্যাগে একটি ভোটার কার্ড মিলেছে। সেখান থেকে ওই নারীর পরিচয় জানতে পেরেছে পুলিশ। ভোটার কার্ডটি তাঁর স্বামীর। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই নারীর বয়স ২৬। তিনি শিশুকন্যাকে নিয়ে শিলিগুড়ি থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তিস্তা সেতুতে তিনি বাস থেকে নেমে পড়েন। কিছুক্ষণ হেঁটে তারপরে নদীতে ঝাঁপ দেন। তিস্তা সেতু লাগোয়া নদী পানিতে কানায় কানায় ভরা। ওই নারীর সন্ধানে রবিবার সন্ধ্যায় বিপর্যয় মোকাবিলা দল এসে কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে। তবে অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় ভরা তিস্তায় তল্লাশি চালানো যায়নি।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, মাসখানেক আগে ওই তরুণীর স্বামী গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সপ্তাহ তিনেক আগে তিনি মেয়েকে নিয়ে শিলিগুড়িতে দিদির বাড়িতে থাকতে গিয়েছিলেন। রবিবার দুপুরে দিদির বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়ে বেরিয়ে পড়েন। তার ভাই কর্মসূত্রে চেন্নাইতে থাকেন। তিনি নদীতে ঝাঁপ দেয়ার আগে ভাইকে ফোন দিয়েছিলেন।

ওই নারীর ভাই বলছেন, স্বামীর মৃত্যুর পরে বোনের মন-মেজাজ ভালো ছিল না। তাই আমরাই তাকে দিদির বাড়িতে থাকতে পাঠিয়েছিলাম। হঠাৎ আজ(রবিবার) বিকেলে বোন আমাকে ফোন করে বলে, তার বোঝা অন্য কারও ওপর চাপাতে চায় না সে। মেয়েকে নিয়ে তিস্তাতে ঝাঁপ দেবে বলে জানায় আমাকে। আমি পাগলের মতো তাকে বোঝাতে থাকি। সে ফোন কেটে দেয়। তারপর থেকে ফোনে যোগাযোগ করতে পারিনি।

এদিকে, জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী জানান, পুলিশ এবং সিভিল ডিফেন্স যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছেন।

সূত্র : আনন্দবাজার

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন