ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড জাপান, নিহত ৩৫

  14-10-2019 10:19AM

পিএনএস ডেস্ক : জাপানের রাজধানী টোকিওসহ বিভিন্ন স্থানে শনিবার আঘাত হেনেছে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হাগিবিস। এতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত এবং আরো ১৫ জন নিখোঁজ হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ঝড়ে আহত হয়েছে আরো দুই শতাধিক মানুষ।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত এলাকাগুলোতে অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতায় ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নিচ্ছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হাগিবিস দ্বীপের উপকূল দিয়ে জাপানের স্থলভাগের দিকে উঠে আসে। রবিবার সকালে দুর্বল হয়ে পড়া ঝড়টি পূর্ব উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় নিগানো, নিগাতা, মিয়াগি, ফুকুসিমা, ইবারাকি, কানাগাওয়া এবং সাইতামাসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এসব স্থানে এখনও উদ্ধার অভিযান চলছে।

এই ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। আহত হয়েছে আরো ২ শতাধিক মানুষ। এখনও নিখোঁজ রয়েছে আরো ১৫ জন।

ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা উপদ্রুত এলাকাগুলোতে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি দমকল কর্মী, উপকূলীয় রক্ষী, পুলিশ ও সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে জাপানে এখনও ৯২ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। এর আগে এই সংখ্যা ১ লাখ ৬২ হাজার বাড়ি বিদ্যুবিহীন অবস্থায় রয়েছে বলে জানানো হয়েছিলো। এছাড়া পনি সঙ্কটে রয়েছে আরো ১ লঅখ ২০ হাজার ঘরবাড়ি।

জাপনে ঘূর্ণিঝড় হাগিবিস আঘাত হানার আগেই ৭ লাখের বেশি মানুষকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। তবে মাত্র ৫০ হাজার মানুষ সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে ঝড়ের কারণে রাজধানীর নারিতা ও হানিদা বিমানবন্দরে বিমান উড্ডয়ন-অবতরণে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিলো ইতিমধ্যে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে রোববারের ৮০০ এর অধিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জরুরি সভা আহ্বান করেছেন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রীকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘টাইফুনের আঘাতে আহতের প্রতি সমবেদনা ও নিহতদের প্রতি দুঃখপ্রকাশ করছি।’

তিনি বলেন, ‘ব্ল্যাকআউটস (বিদ্যুৎবিচ্ছিন্নতা), জলাবদ্ধতা ও পরিবহন পরিষেবা স্থগিতের বিষয়ে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা সর্বসাধারণকে ভূমিধস ও অন্যান্য ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলছি।’

প্রসঙ্গত, হাগিবিস শব্দটি এসেছে ফিলিপাইনের ট্যাগালগ ভাষা থেকে। ট্যাগালগ অর্থ গতি।

জাপনে এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ কোনো নতুন ঘটনা নয়। মাত্র এক মাস আগেই অন্য এক ঘূর্ণিঝড়ে দেশটির ৩০ হাজারের মতো ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছিল। তবে জাপানে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় বা টাইফুন আঘাত হেনেছিল ১৯৫৮ সালে। ক্যানোগাওয়া নামের ওই ঘূর্ণিঝড়ে তখন এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন