ভারতে গিয়ে বাংলাদেশি মুসলিমরা অতিরিক্ত সময় থাকলে ২০০ গুণ জরিমানা

  10-12-2019 05:16PM

পিএনএস ডেস্ক : ভিসার মেয়াদ শেষে জরিমানা আদায়ে ধর্মীয় বৈষম্য সৃষ্টি করছে ভারত। প্রায় এক বছর আগে ভিসা বিধিমালায় এমন কড়াকড়ি করে দেশটি।

ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

নতুন এই নীতিমালায় একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে যে পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে তার তুলনায় একজন মুসলিমকে দিতে হবে দুইশ গুণ বেশি।

দুই সপ্তাহ আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের কলকাতা সফরে গেলে তখন বিষয়টি প্রকাশ পায়।

ওই সময় দুই দেশের মধ্যে টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ দলের সাইফ হাসানের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তখন তিনি কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনে যোগাযোগ করেন। যেখান থেকে বিষয়টি চলে যায় ভারতের ফরেইনার রিজওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসে (এফআরআরও)।

তখন এফআরআরও সূত্রে জানা যায়, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের কোনো সংখ্যালঘু ভিসার মেয়াদের দুই বছরের বেশি থাকলে ৫০০ রুপি, ৯১ দিন থেকে দুই বছর থাকলে ২০০ রুপি এবং মেয়াদ শেষ থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত থাকলে ১০০ রুপি জরিমানা দিতে হবে।

অন্যদিকে এই তিন দেশের সংখ্যালঘু গোষ্ঠী ছাড়া অন্য যে কাউকে একই সময়ের জন্য জরিমানা দিতে হবে যথাক্রমে ৫০০ ডলার (৩৫ হাজার রুপি), ৪০০ ডলার (২৮ হাজার রুপি) এবং ৩০০ ডলার (২১ হাজার রুপি)।

উল্লেখিত তিন দেশের সংখ্যালঘুর জন্য এই জরিমানা রুপিতে ধার্য করা হলেও অন্যদের ক্ষেত্রে নির্ধারণ করা হয়ে ডলারে।

এফআরআর ওয়েবসাইটেও ভিসা বিধিমালার নতুন এই নিয়ম উল্লেখ করা হয়।

দ্য হিন্দু জানায়, নতুন এই নিয়ম অনুসারে বাংলাদেশ দলের হিন্দু ধর্মাবলম্বী ক্রিকেটার লিটন দাস যদি ভিসার মেয়াদের অতিরিক্ত একদিন ভারতে অবস্থান করেন তাকে জরিমানা দিতে হবে ১০০ রুপি আর ইসলাম ধর্মাবলম্বী সাইফ হাসানকে সে ক্ষেত্রে দিতে হবে ২০০ গুণ বেশি ২১ হাজার রুপি।

এদিকে দেশটির ভিসা বিধিমালার নতুন এই নিয়মে ‘ধর্মীয় মানদণ্ড টেনে বৈষম্য সৃষ্টি’ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা।

সম্প্রতি এক দুস্থ নারীকে বাংলাদেশে ফেরাতে ২১ হাজার রুপি ফান্ড তুলতে হয়েছিল ডেপুটি কমিশনকে। ওই নারী ভিসার মেয়াদ শেষে ভারতে আটকে পড়েছিলেন এবং বিপুল অর্থের এই জরিমানা দিতে অক্ষম ছিলেন।

ভারতের এই কড়াকড়ি আরোপে বাংলাদেশকে ‘আহত’ করেছে বলে বাংলাদেশের এক কর্মকর্তার প্রশ্ন, ‘ঐতিহাসিক ও নৈতিকভাবে কীভাবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে একই নিয়মের মধ্যে ফেলতে পারে ভারত।’

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন