করোনাভাইরাসের বেশি ঝুঁকিতে কারা?

  18-02-2020 01:11PM


পিএনএস ডেস্ক: চীনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন। এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর এটিই এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় প্রতিবেদন।

মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানায়।

চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিসিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছেন অসুস্থ ও বয়স্ক ব্যক্তিরা।

গবেষণা প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ২ দশমিক ৩ শতাংশ। ভাইরাসটির শনাক্তস্থল চীনের হুবেই প্রদেশে মৃত্যুর হার ২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং পৃথিবীর অন্য অংশে ০ দশমিক ৪ শতাংশ। এছাড়া, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

মঙ্গলবার পর্যন্ত চীনের মূল ভূখণ্ডে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৭২ হাজার ৪৩৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৮৬৮ জনের। একদিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮৮৬ জন, যাদের মধ্যে ১৮০৭ জনই হুবেই প্রদেশের। নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ৯৮ জনের। চীনা কর্তৃপক্ষের মতে, ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছেন।

সোমবার ‘চাইনিজ জার্নাল অব এপিডেমিওলজি’তে প্রকাশিত সিসিডিসি’র প্রতিবেদনটিতে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত ৭২ হাজার ৩১৪ জনের কেইস নিয়ে গবেষণা করা হয়। এর মধ্যে নিশ্চিত ৪৪ হাজার ৬৭২টি কেইস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, কেইসগুলোর মধ্যে ৮০ দশমিক ৯ শতাংশই ছিল মৃদু, ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ গুরুতর এবং ৪ দশমিক ৭ শতাংশ মারাত্মক গুরুতর। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ৮০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, যা মোট মৃত্যুর ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। নয় বছর বয়স পর্যন্ত কোনো শিশুর এবং তারপর থেকে ৩৯ বছর বয়সী কারো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। যাদের বয়স ৪০ এর কোঠায়, তাদের মৃত্যুর হার ০ দশমিক ৪ শতাংশ, ৫০ এর কোঠায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩ শতাংশ, ৬০ এর কোঠায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ৭০ এর কোঠায় ৮ শতাংশ।

পুরুষদের মৃত্যুর হার নারীদের চেয়ে বেশি, যা যথাক্রমে ২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া, যাদের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট বা উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তারাও বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।

চীনে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৯ জন স্বাস্থ্যকর্মী। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের।

এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার হার বেড়েছিল ২৩ থেকে ২৬ জানুয়ারি। এরপর তা আবার কমতে শুরু করে। ভাইরাস সংক্রমণের হার নিম্নমুখী হওয়ার অন্যতম কারণ শহরগুলো অবরুদ্ধ করে রাখা এবং কোভিড-১৯ সম্পর্কে সঠিক তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া।

তবে প্রতিবেদনটিতে হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলা হয়, অবরুদ্ধ অবস্থার অবসান হলে এবং ছুটি কাটিয়ে আরও মানুষ শহরে এলে নতুন করে যেন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা না দেয়, তার প্রস্তুতি নিতে হবে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন