উ. কোরিয়ায় করোনা নেই!, মানতে নারাজ যুক্তরাষ্ট্র ও দ. কোরিয়া

  04-04-2020 12:09AM

পিএনএস ডেস্ক: করোনা ভাইরাস প্রথম মহামারি ধারণ করে চীনের উহানে। এই চীনের সঙ্গেই সীমান্ত রয়েছে উত্তর কোরিয়া। চীন থেকে ছড়িয়ে করোনা এখন বিশ্বজুড়ে বিস্তার লাভ করেছে। চীনের আশাপাশের অনেক দেশ করোনা আক্রান্ত হলে উত্তর কোরিয়ার দাবি- তাদের দেশে কোনও করোনা ভাইরাসের রোগী নেই।

তবে তাদের এই দাবি মানতে নারাজ যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এটা ‘অসম্ভব’।

উত্তর কোরিয়ার সেন্ট্রাল ইমারজেন্সি অ্যান্টি-এপিডেমিকের সদর দফতরের পরিচালক পাক ইয়ং-সু শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, তিনি যত দূর জানেন তাদের দেশে এখন আর কেউ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত নেই। তিনি এর কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, তাদের দেশ বিষয়টি নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক ছিল। তারা বিদেশ থেকে দেশে ফেরা সবাইকে কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়েছে। পাশাপাশি সব ধরনের পণ্য-সামগ্রী জীবাণুমুক্ত কারার মতো বৈজ্ঞানিক পদক্ষেপগুলোও হাতে নিয়েছে। এ ছাড়া তাঁর দেশ সীমান্ত, সমুদ্র এবং আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে।

তবে পাক ইয়ং-সু এর এই দাবি খুব সহজে মেনে নিতে রাজি হননি দক্ষিণ কোরিয়ায় নিয়োজিত মার্কিন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল রবার্ট আবরামস এবং উত্তর কোরিয়াবিষয়ক মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনকে নিউজের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওলিভার হোথাম।

জেনারেল রবার্ট আবরামস বলেন, উত্তর কোরিয়ার এই দাবি মোটেও সত্য নয়, এটি অসম্ভব। তিনি সিএনএন ও ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন। এই মন্তব্যের পেছনে তিনি তাঁদের গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দেন। তবে দেশটিতে কতজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন তার ধারণা দিতে পারেননি এই মার্কিন কর্মকর্তা।

এনকে নিউজের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওলিভার হোথাম বলেন, উত্তর কোরিয়ায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ব্যক্তি থাকার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁর যুক্তি, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে দেশটির সীমান্ত রয়েছে। ফলে সেখানে করোনার সংক্রমণ না থাকাটা একেবারেই অসম্ভব। বিশেষ করে চীনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার বৃহৎ সীমান্ত বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। তবে দেশটিতে এখনো পুরোমাত্রার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তবে চীনে যখন করোনা ভাইরাস প্রভাব বিস্তার করে তখন আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে খবর প্রকাশ হয় যে, ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। করোনা বিস্তারের ঝুঁকি বিবেচনা করে তাকে হত্যা করা হয়েছে প্রতিবেশি দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যম এখবর দেয়।

কমিউনিজম ও সমাজতন্ত্র ভাবধারায় শাসিত দেশটি বিশ্ব থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। আজব আজব সব আইন জারি করা আছে দেশটিতে। কিম পরিবারের তিন পুরুষ শাসন করে আসছে এই দেশটিকে। মাঝে মধ্যে নাগরিকদের ওপর অমানবিক আচরণের খবর প্রকাশিত হয়। বর্তমান নেতা কিম জং আন এবং তার পরিবারের প্রতি পুরোপুরি আনুগত্য দেখিয়ে জীবন কাটাতে বাধ্য করা হচ্ছে দেশটির নাগরিকদের।

প্রত্যেক নাগরিকের ওপরই ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে। উত্তর কোরিয়ায় সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে চলা খুবই কঠিন। এছাড়া দেশটিতে প্রত্যেক বছর অনেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলেও তা যাচাই করা যায় না।

দেশটির গণমাধ্যমের বিন্দুমাত্র স্বাধীনতা নেই। পরিস্থিতি সেখানে এতটাই ভয়াবহ যে কেউ দেশের বাইরের বা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে কিছু জানার চেষ্টা করলে তাকে জেলে যেতে হয়। দেশটিকেই বিশ্বের উন্মুক্ত কারাগার বলে অ্যাখ্যায়িত করে থাকে। সামান্য বিষয়ে কারাদন্ড হতে পারে।আর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা সেখানে কোনো বিষয়ই নয়। প্রকাশ্যে শিরচ্ছেদও করা হয়।

পিএনএস/হাফিজ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন