আপন জুয়েলার্সের মালিকসহ ৩জনের জামিন স্থগিত আপিলেও বহাল

  02-01-2018 11:07AM


পিএনএস ডেস্ক: অর্থ পাচার মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিকসহ তিনজনের জামিন স্থগিতে দেয়া চেম্বার আদালতের আদেশ আপিল বিভাগে বহাল রাখা হয়েছে। মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য ৮ জানুয়ারি সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

বনানীতে বহুল আলোচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণকান্ডের অভিযোগের ঘটনায় কেঁচো খুড়তে সাপ রেরিয়ে আসার মতো। এর আগে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের করা পাঁচ মামলার মধ্যে তিন মামলায় আপন জুয়েলার্সের তিন মালিককে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে চেম্বার আদালত।

গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতের বিচারপতি ইমান আলী তাদের জামিন স্থগিতের আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। অন্যদিকে আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুন্সী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।

মঙ্গলবার আপিল বিভাগও জামিন স্থগিতে দেয়া চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রেখেছে।

এর আগে ১৪ ডিসেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাই দিলদার আহমেদ, গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের জামিন দেন। পরে এ জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

এর আগে ১৪ ডিসেম্বর আবেদনকারীদের পক্ষে হাইকোর্টের আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, পাঁচ মামলার মধ্যে গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদ পৃথক দুই মামলায় জামিন পেয়েছেন। ফলে তাদের কারা মুক্তিতে আইনগত বাধা নেই। এক মামলায় দিলদার জামিন পেলেও আরও দুই মামলা থাকায় তিনি এখন জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন না।

পৃথক পাঁচ মামলায় জামিন চেয়ে আপন জুয়েলার্সের তিন মালিকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২২ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। কেন তাদের জামিন দেওয়া হবে না তা রুলে জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর গত বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার শুনানি নিয়ে আদালত তিনটি আবেদন নিষ্পত্তি করে জামিন মঞ্জুর করে এ রায় দেন। তবে দিলদার আহমেদের অপর দুটি আবেদন মুলতবি (স্যান্ড ওভার) রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৮ জুন ও ১২ আগস্ট যথাক্রমে আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে দ্য কাস্টমস অ্যাক্ট-১৯৬৯ ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ১০টি মামলা দায়ের করে শুল্ক গোয়েন্দা। চোরাচালানের মাধ্যমে প্রায় ১৫ মণ স্বর্ণালঙ্কার ও ডায়মন্ড আটকের পর কর নথিতে অপ্রদর্শিত ও গোপন রাখায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছিল।

এর আগে বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় আপন জুয়েলার্সের নাম সামনে আসে। ওই ঘটনায় করা মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়। অন্য আসামিরা হলেন নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, শাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও তার দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ। বনানীর একটি হোটেলে দিলদার হোসেন সেলিমের ছেলে সাফাত আহমেদ কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুম থেকে প্রায় ১৫ মণ স্বর্ণ ও ডায়মন্ডের অলঙ্কার উদ্ধার করে। পরে এসব অলঙ্কার বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়া হয়।

জন্মদিনের পার্টির কথা বলে গত ২৮ মার্চ রাতে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ডেকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। ঘটনার ৪০ দিন পর এ ব্যাপারে বনানী থানায় মামলা করতে গেলে মামলা না নিয়ে বাদীকে পুলিশ হয়রানি করে। পরে গত ৬ মে শাফাত, নাঈমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা নেয়। পাঁচ আসামিকেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা এখন কারাগারে আছেন। এই মামলা চাপা দিতে বিপুল অর্থ খরচের চেষ্টার অভিযোগ উঠলে অর্থের উৎস ডার্টি মানি কি না অথবা তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম অস্বচ্ছ কি না, তা খতিয়ে দেখতে শুরু করে শুল্ক গোয়েন্দারা। আপন জুয়েলার্সের তিন মালিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে পাঁচটি মামলা হয়।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন