রুপাকে নিরাপদে পৌঁছে দিতে বলেছিলেন সহপাঠী

  09-01-2018 05:05PM

পিএনএস ডেস্ক : টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে রুপা খাতুনকে গণধর্ষণের পর হত্যা মামলায় আজ মঙ্গলবার ভাইসহ তিনজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এ কে এম নাসিমুল আক্তার বলেন, ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়ার আদালতে রুপার ভাই হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিক, রুপার সহপাঠী আবদুল বারিক ও রুপার আত্মীয় মমতাজ উদ্দিনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

রুপার ভাই হাফিজুল ইসলাম আদালতকে বলেন, রুপা বগুড়া থেকে বাসে ওঠার পর তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা হয়। তখন রুপা তাঁকে জানান যে ছোঁয়া পরিবহনে ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তিনি। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে রুপাকে ফোন দিলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

রুপার সহপাঠী আবদুল বারিক আদালতকে বলেন, ঘটনার দিন বগুড়ায় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা দিয়ে রুপা ও তিনি ছোঁয়া পরিবহনের বাসে ওঠেন। এলেঙ্গা যাওয়ার পর তিনি ওই বাস থেকে নেমে ঢাকার দিকে অন্য একটি বাসে উঠে রওনা হন। রুপা তখন গাড়িতে একাই ছিলেন। এ সময় তিনি চালক ও সুপারভাইজারসহ গাড়ির কর্মীদের অনুরোধ করেন রুপাকে নিরাপদে পৌঁছে দিতে। আদালতের কাঠগড়ায় থাকা ছোঁয়া পরিবহনের চালক, সুপারভাইজারসহ পাঁচ কর্মীকে শনাক্ত করেন তিনি।

পরে আসামিদের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন ও শামীম চৌধুরী সাক্ষীদের জেরা করেন।

১৪ জানুয়ারি এই মামলার আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধকারী চার বিচারিক হাকিমের সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।

৩ জানুয়ারি মামলার বাদী মধুপুরের অরণখোলা ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামের সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। মামলার ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রুপা খাতুনকে চলন্ত বাসে পরিবহনশ্রমিকেরা ধর্ষণ করেন। পরে তাঁকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রেখে যান। পুলিশ ওই রাতেই তাঁর লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে পরের দিন বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা করেন।

রুপার ভাই ২৮ আগস্ট মধুপুর থানায় গিয়ে লাশের ছবি দেখে রুপাকে শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর (৪৫), সুপারভাইজার সফর আলী (৫৫) এবং সহকারী শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীরকে (১৯) গ্রেপ্তার করে। পুলিশের কাছে তাঁরা রুপাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেন।

২৯ আগস্ট বাসের তিন সহকারী শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর এবং ৩০ আগস্ট চালক হাবিবুর ও সুপারভাইজার সফর আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁরা সবাই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছেন। ৩১ আগস্ট রুপার লাশ উত্তোলন করে তাঁর ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাঁকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নিজ গ্রাম আসানবাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন