কারাগারে দুইদিন, যেভাবে সময় কাটছে খালেদা জিয়ার

  10-02-2018 01:53PM


পিএনএস ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। কিন্তু কারাগারে কিভাবে রয়েছেন এই নেত্রী সে ব্যাপারে কৌতুহল সবার।

কারা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার গভীর রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার পাশাপাশি এবাদত-বন্দেগি করেন তিনি। শনিবার ভোরে ফজর নামাজ পড়ে পত্রিকার পাতায় চোখ রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসন। পরে সকালে নাস্তা করেন তিনি।

কারা অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে কারাগারের মূলফটকের ভেতরে পুরনো অফিস ভবনে রাখা হয়েছে। সিনিয়র জেল সুপারের ওই অফিস কক্ষে একটি খাট, টেবিল, চেয়ার, টিভি ও দুটি ফ্যান রয়েছে। দেয়া হয়েছে টেলিভিশন, তবে সেখানে দেখানো হবে শুধু বিটিভি। পাশের রুমে গ্যাসের চুলায় রান্নার ব্যবস্থাও রয়েছে।

তিনি বলেন, তার চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে একজন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে রয়েছেন তার ব্যক্তিগত পরিচারিকা ফাতেমা। ভিআইপি বন্দি ও জেলকোড অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। সকালে তাকে তিনটি জাতীয় দৈনিক পড়তে দেয়া হচ্ছে।

ওই সেবিকা সার্বক্ষণিক তার সঙ্গে থাকবেন। ভিআইপিবন্দি ও জেল কোড অনুযায়ী খালেদা জিয়া সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পাহারায় ছয়জন মহিলা কারারক্ষী তিন শিফটে নিযুক্ত রয়েছেন। এছাড়া তার নিরাপত্তায় কারাগারের ভেতরে মোট ২৫ জন কারারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে।

কারা সূত্র জানিয়েছে, প্রথম শ্রেণির বন্দিদের জন্য কারাগারে প্রতিদিন চিকন চালের ভাত, মাংস, সবজি ও ডালের ব্যবস্থা থাকে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর জন্যও তাই থাকবে। এছাড়া সকালে থাকবে পছন্দসই নাস্তা, বিকালে ফলমূল। সেসব খাবার হবে উন্নত মানের। এক্ষেত্রে তার পছন্দকে গুরুত্ব দেয়া হবে।

কারা সূত্রে আরো জানা গেছে, শুক্রবার কারাগারে খালেদা জিয়া প্রথম রাতে ভাত, মাছ ও সবজি খেয়েছেন। সকালে কারা কর্তৃপক্ষের দেয়া রুটি-সবজি দিয়ে নাস্তা করেন তিনি।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের ৮ ফেব্রুয়ারি প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক জানান, সামাজিক অবস্থান এবং বয়স বিবেচনায় মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সাজা দেয়া হয়।

এছাড়া, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৫ আসামিকে অর্থদণ্ডসহ ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, মাগুরা বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ এবং জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান। এর মধ্যে তারেক রহমান বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন এবং কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং মমিনুর রহমান পলাতক রয়েছেন।

রায় শেষে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, রায়ের কপি হাতে পাওয়া পর উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। অন্যদিকে, মামলার রায়ে সন্তুষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবিরা।

এরপর পৌনে তিনটার দিকে বেগম খালেদা জিয়াকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কারাগার ভবনে নেয়া হয়।

এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয় ২৫ জানুয়ারি । ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের তেসোরা জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন -দুদক খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ মোট ৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন