আপিল বিভাগের অসন্তোষ : ভবন ভাঙ্গার ব্যাপারে বিজিএমইএকে মুচলেকা দিতে হবে

  27-03-2018 12:03PM



পিএনএস ডেস্ক: ভবন ভাঙতে আদালতের আদেশের পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও হাতিরঝিলে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বহুতল ভবনটি ভাঙতে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ। আদালত বিজিএমইএর আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘ভবন কতদিনের মধ্যে ভাঙবেন সে বিষয়ে মুচলেকা দিতে হবে। অন্যথায় কোনো সময় আবেদন গ্রহণ করা হবে না। বার বার সময় আবেদন করেন। এতে আমাদেরই লজ্জা লাগে। ’

আজ মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। এর আগে গত রোববার আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন একই বেঞ্চ।

আদালতে বিজিএমইএর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। পরে আদালত বলেন, সময় আবেদনের বিষয়ে মুচলেকা দেয়ার পরেই আদেশ দেয়া হবে।

এর আগে গত ২৫ মার্চ শুনানিতে আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জানিয়ে বিজিএমইএ’র আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী বলেন, মৃত্যুদণ্ডের আসামিও শেষ আবেদন করে থাকে। আমরাও শেষ সুযোগ চাচ্ছি। এরপর আদালত আদেশের জন্য ২৭ মার্চ দিন ঠিক করেন।

গত ৫ মার্চ বহুতল ভবনটি ভাঙতে আরো এক বছর সময় চেয়ে আবেদন করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ।

গত বছরের ৮ এপ্রিল বিজিএমইএর বহুতল ভবনটি ভাঙতে সাত মাস সময় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আদেশে আদালত বলেছিলেন, এটাই শেষ সুযোগ। আর সময় দেয়া হবে না।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ভবন ভাঙতে আদালতের দেয়া নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই সময় চেয়ে আবেদন করলো বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ।

এর আগে গত বছরের ৫ মার্চ আপিল বিভাগ বিজিএমইএ ভবন অবিলম্বে ভেঙ্গে ফেলতে রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে (রিভিউ) করা আবেদন খারিজ করে দেন। তখন ভবন ভাঙতে কত দিন সময় লাগবে, তা জানিয়ে আবেদন করতে বলেন। বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ ভবন সরাতে তিন বছর সময় চেয়ে আবেদন করে। ১২ মার্চ আপিল বিভাগ আবেদন নিষ্পত্তি করে ছয় মাস সময় দেন ভবন সরাতে।

২০১৬ সালের ২ জুন বিজিএমইএর করা লিভ টু আপিল খারিজ হয়ে যায় আপিল বিভাগে। ওই বছরের ৮ নভেম্বর রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের পূর্ব পাশে অবস্থিত বিজিএমইএর ১৬তলা ভবনটি অবিলম্বে সংগঠনের নিজ খরচায় ভেঙ্গে ফেলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে ৮ ডিসেম্বর রিভিউ আবেদন করে বিজিএমইএ।

এর আগে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ে বিজিএমইএ ভবন ভাঙ্গার নির্দেশ দেয়া হয়। রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে ফেলতে নির্দেশ দেয়া হয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। এই লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ।

পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ‘বেগুনবাড়ি খাল’ ও ‘হাতিরঝিল’ জলাভূমিতে অবস্থিত ‘বিজিএমইএ কমপ্লেক্স’ নামের ভবনটি নিজ খরচে অবিলম্বে ভাঙতে আবেদনকারীকে (বিজিএমইএ) নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে। এতে ব্যর্থ হলে রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে ভবনটি ভেঙ্গে ফেলতে নির্দেশ দেয়া হলো। এ ক্ষেত্রে ভবন ভাঙ্গার খরচ আবেদনকারীর (বিজিএমইএ) কাছ থেকে আদায় করবে তারা।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন