২ শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে হাইকোর্টের তদন্ত কমিটি গঠন

  01-08-2018 02:10PM


পিএনএস ডেস্ক: রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া তদন্তের জন্য কারাগারে গিয়ে বাস চালককে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।

কুর্মিটোলার দুর্ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সদস্যরা হলেন, বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর মিজানুর রহমান, বুয়েটের প্রফেসর মো. হাদিউজ্জামান ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ার‌ম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। এই কমিটি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান, দুর্ঘটনার জন্য কার কতটুকু দায় তা নিরূপণ করবে। এই তথ্য জানান আইনজীবী রুহুল কুদ্দস কাজল।

আজ বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এর আগে ৩০ জুলাই সোমবার রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের পরিবারকে এক সপ্তাহের মধ্যে আপাতত পাঁচ লাখ টাকা (টোকেন মানি) করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের জন্য জাবালে নূর পরিবহন কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন আদালত। সঙ্গে সঙ্গে, রিটের পরবর্তী আদেশের জন্য ১২ আগস্ট দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। ওই দিনের মধ্যে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়া কুর্মিটোলার এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় জাবালে নূর পরিবহনের দায় নির্ধারণে তদন্ত প্রতিবেদন ২ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতে সহায়তা করবে পুলিশ কমিশনার ও বিআরটিএ।

সোমবার জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল নিজেই শুনানি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ফরিদা ইয়াসমিন।

এর আগে জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বাদী হয়ে সোমবার দুপুরে হাইকোটের্র সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট দায়ের করেন।

আদেশের পরে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যমান যে ট্রাফিক আইন আছে তা যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের নিহত দুই শিক্ষার্থীর প্রত্যেক পরিবারকে ব্যাংক ইন্টারেস্টসহ দুই কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

যদিও রিটে দুই পরিবারকে এক কোটি টাকা করে মোট দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকার পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং জাবালে নূর পরিবহন কর্তৃপক্ষকে রুলের জবাব দিতে হয়েছে।

তিনি জানান, রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বেপরোয়া বাসের চাপায় দুই কলেজশিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় তাদের পরিবারকে তাৎক্ষণিক চাহিদা মেটানোর জন্য এক সপ্তাহের মধ্যে ৫ লাখ টাকা করে দিতে জাবালে নূর পরিবহনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আহত হয়ে যেসব শিক্ষার্থী হাসপাতালে আছেন তাদের সুচিকিৎসার জন্য ওই পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতের জারি করা রুলে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স কোন যোগ্যতার ভিত্তি দেওয়া হয় এবং সড়কে চলাচলকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিআরটিএ কী পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বিআরটিএ’কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রোববার দুপুরে হোটেল রেডিসনের সামনে জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার ঘেঁষে রাস্তার বাঁ-পাশে দাঁড়ানো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একদল শিক্ষার্থীর ওপর উঠে যায় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাস। এতে দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। আহত হন আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। প্রতিবাদে তখন বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন