সাক্ষ্য দিলেন মিমের বাবা

  06-11-2018 07:56AM



পিএনএস ডেস্ক: রাজধানীতে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের মামলায় দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলমসহ দুজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে আদালত।

সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন এবং মঙ্গলবার অপর সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেন।

ওই আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বলেন, রবিবার মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করে আদালত। ওইদিন মিমের বাবা মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলমের আংশিক সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। সোমবার তার সাক্ষ্য শেষ হয়। এরপর নিহত আব্দুল করিম রাজীবের সুরতহালে সাক্ষী মেহরাজের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।

সাক্ষ্য গ্রহণকালে কারাগারে থাকা আসামি জাবালে নূরের ঘাতক বাসের মালিক মো. শাহদাত হোসেন আকন্দ (৬০), চালক মাসুম বিল্লাহ (৩০), হেলপার মো. এনায়েত হোসেন (৩৮) ও চালক মো. জোবায়ের সুমনকে (৩৬) আদালতে হাজির করা হয়। মামলার অপর দুই আসামি বাসমালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) ও হেলপার মো. আসাদ কাজী (৪৫) পলাতক রয়েছেন। মামলায় গত ২৫ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন।

এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন ডিবি পুলিশ উত্তর ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের ইন্সপেক্টর কাজী শরীফুল ইসলাম।

চার্জশিটে বলা হয়, গত ২৯ জুলাই সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে আগারগাঁও তালতলা থেকে আব্দুল্লাহপুরের উদ্দেশে ঢাকা মেট্টো ব- ১১- ৯২৯৭ বাসটি ছেড়ে আসে এবং ঢাকা মেট্টো- ব ১১-৭৬৫৭ বাসটি সকাল ১০টা ৩০ ঘটিকায় এবং ঢাকা মেট্টো- ব ১১-৭৫৮০ বাসটি সকাল ১০টা ৪৫ ঘটিকায় মিরপুর আনসার ক্যাম্প হতে বাড্ডা নতুন বাজারের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। বাসগুলো ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন ইবি চত্বরে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে একত্রিত হওয়ার পর ঢাকা মেট্টো- ব ১১-৭৫৮০ পেছনে পড়ে যায়। অপর বাস দুটি পাল্লাপাল্লি ও রেষারেষি করে বেশি যাত্রী ও বেশি ভাড়া পাওয়ার আশায় দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে চালাতে শুরু করে। তারা জিল্লুর রহমান ফøাইওভারের ঢাল থেকে প্রতিদিনের মতো অপেক্ষমাণ যাত্রী ওঠানোর জন্য রেষারেষি অব্যাহত রাখে। যার কারণে বাস দুটি একে অপরকে চারবার অভারটেকিং করে। বেপরোয়া গতিতে চালানোর কারণে আসামি মাসুমের চালিত বাস ফ্লাইওভারে ঢালে রেলিং ও ওয়ালের সাথে ঘষা বা আঘাত লাগায়। ওই সময় যাত্রীরা বাসটি সাবধানে চালানোর জন্য ড্রাইভার ও হেলপারদের অনুরোধ ও ডাক চিৎকার করে। দ্রুত বেপরোয়া বাস চালানোর জন্য তাতে কেউ গুরুত্বর যখম ও মারা যেতে পারে তা জেনেও তারা দ্রুত বেপরোয়া গতিতে বাস চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে আসামি জোবায়ের চালিত ঢাকা মেট্টো- ব ১১-৭৬৫৭ বাসটি মাসুম বিল্লাহ চালিত ঢাকা মেট্টো- ব ১১-৯২৯৭ বাসটিকে পেছনে ফেলে ফ্লাইওভারের ঢালের সামনে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে ডান দিকে রাস্তা ব্লক করে যাত্রী ওঠাতে থাকেন। মুহূর্তের মধ্যে মাসুম বিল্লাহ চালিত বাসটি ডান দিক দিয়ে যেতে না পেরে স্বেচ্ছাকৃতভাবে বাম দিকে দিয়ে যেয়ে বাসের জন্য অপেক্ষমাণ শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪/১৫ জন ছাত্র ছাত্রীর উপর তুলে দেয়। যার কারণে ১৩/১৪ জন ছাত্রছাত্রী গুরুতর আহত হয়। যাদের মধ্যে ওই কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজীব মারা যায়। এছাড়া এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র সোহেল রানা, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইমরান চৌধুরী, মেহেদী হাসান জিসান, রাহাত, সজিব, জয়ন্তি, প্রথম বর্ষের ছাত্রী রুবাইয়া, ্এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তৃপ্তাসহ আরও কয়েকজন গুরুতর আহত হয়।

গত ২৯ জুলাই দিবাগত রাতে ক্যান্টনমেন্ট থানায় নিহত একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম এ মামলা দায়ের করেন।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন