বাগমারায় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, শিক্ষককে কারাদণ্ড

  29-06-2019 09:17PM

পিএনএস ডেস্ক : রাজশাহীর বাগমারায় পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বিপুল কুমার প্রাং (৪৫) নামের এক শিক্ষককে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তিনি উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের মোহম্মাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, বিপুল কুমার বিভিন্ন সময়ে স্কুলের মেয়েদের যৌন হয়রানি করতেন। শনিবার বিদ্যালয়ের ক্লাস চলাকালীন শিক্ষক বিপুল কুমার প্রামাণিক পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর গায়ে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। পরে ছাত্রী কাঁদতে কাঁদতে শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে আসে। সে সরাসরি তার পরিবারের সদস্যদের কাছে অভিযোগ দেয় এবং ঘটনাটি খুলে বলে।

পরে এলাকার লোকজনও ঘটনাটি জানতে পারেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ মিছিল করেন। শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের শ্লোগানও দেওয়া হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে অভিযুক্ত শিক্ষককে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে রেখে তালাবন্ধ করে দেন সহকর্মীরা।

খবর পেয়ে স্থানীয় থানার ওসি (প্রশাসন) আতাউর রহমান এবং ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় নেওয়ার চেষ্টা করলে ক্ষুব্ধ লোকজনের বাধায় ব্যর্থ হন। পরে দুপুর ২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাতিউল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে শান্ত করেন। এ সময় চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে সহকারী শিক্ষক বিপুল কুমারের বিরুদ্ধে কোমলমতি ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ দেন।

এ সময় অভিযোগকারীরা এ বিষয়ে পূর্বে একাধিকবার স্কুলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তা মীমাংসার বিষয় অভিহিত করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে। অভিযোগকারীরা স্কুলের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদেরও এজন্য দায়ী করেন। তাদের অভিযোগ, এর আগে অভিযুক্ত শিক্ষকের কুকর্মের বিষয়ে স্কুলের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ ধরণের অপকর্ম অব্যাহত রয়েছে।

পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিউল ইসলাম সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসান। আদালতে অভিযুক্ত শিক্ষক নিজের অপরাধ স্বীকার করলে তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এ সময় স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি পরিবর্তনসহ সকল শিক্ষকের বদলির ব্যবস্থা নিবেন এমন আশ্বাস দেন ইউএনও। পরে বিক্ষুব্ধ লোকজন তাদের অবরোধ প্রত্যাহার করলে পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে থানায় নিয়ে যান।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন