রূপপুরে বালিশকাণ্ড: মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থা দেখেই ব্যবস্থা নেবেন হাইকোর্ট

  21-07-2019 05:43PM

পিএনএস ডেস্ক :পাবনায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভবন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ভবনের আসবাবপত্র ও বালিশ কেনাসহ অন্যান্য কাজের অস্বাভাবিক ব্যয় সংক্রান্ত দুর্নীতির ঘটনায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত ৫০ জনের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় কী ব্যবস্থা নেয় তা দেখার অপেক্ষায় থাকবেন বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে আগামী ২ মাসের মধ্যে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী অ্যাকশন নেয় সেটা দেখেই আদালত পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন।

রবিরার (২১ জুলাই) বিচারপতি তরিকুল হাকিম ও বিচারপতি মো.সরোওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন।

এর আগে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রে আসবাবপত্র ক্রয়ের দুর্নীতির ঘটনায়
গত ২ জুলাই জড়িতদের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে আসবাবপত্র কেনা ও উত্তোলনে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের সততা ও স্বচ্ছতা বজায় না রাখার ব্যর্থতা কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

সেইসঙ্গে পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত তদন্ত কমিটিকে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।

আদালত গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয় সচিব, পাবনার গণপূর্ত অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেন।

এমনকি, বালিশ থেকে ফার্নিচারসহ অন্যান্য জিনিস অস্বাভাবিক দামে কেনা এবং ভবনে তোলায় যে অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়েছে এটি তদন্ত করার জন্য একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

এর আগে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীর ভবনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ও তা ভবনে তোলায় অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে গত ১৬ মে দৈনিক ‘দেশ রূপান্তর’সহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। পরে ৯ মে এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন এই আইনজীবী।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীতে ২০ তলা ১১টি ও ১৬ তলা ৮টি ভবন হচ্ছে। এরই মধ্যে ২০ তলা আটটি ও ১৬ তলা একটি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ২০ তলা ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের জন্য প্রতিটি বালিশ কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৫৭ টাকা। আর ভবনে বালিশ ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৬০ টাকা।

প্রতিটি রেফ্রিজারেটর কেনার খরচ দেখানো হয়েছে ৯৪ হাজার ২৫০ টাকা। রেফ্রিজারেটর ভবনে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১২ হাজার ৫২১ টাকা। একেকটি খাট কেনা দেখানো হয়েছে ৪৩ হাজার ৩৫৭ টাকা। আর খাট উপরে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১০ হাজার ৭৭৩ টাকা।

প্রতিটি টেলিভিশন কেনায় খরচ দেখানো হয়েছে ৮৬ হাজার ৯৭০ টাকা। আর টেলিভিশন ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭ হাজার ৬৩৮ টাকা। বিছানার খরচ ৫ হাজার ৯৮৬ টাকা দেখানো হয়েছে। তা ভবনে তুলতে খরচ দেখানো হয়েছে ৯৩১ টাকা। প্রতিটি ওয়ারড্রোব কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে ৫৯ হাজার ৮৫৮ টাকা। আর তা ওঠাতে দেখানো হয়েছে ১৭ হাজার ৪৯৯ টাকার খরচ। এ রকম বৈদ্যুতিক চুলা, বৈদুতিক কেটলি, রুম পরিষ্কারের মেশিন, ইলেকট্রিক আয়রন, মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি কেনাকাটা ও ভবনে তুলতে অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়েছে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন